মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরসহ ২৪ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজধানীর চার্টার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী তুহিন ফারাবিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
তুহিন ফারাবির অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে রোববার রাত ১১টার দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢামেক হাসপাতালের কর্তব্যরত একজন চিকিৎসক সমকালকে জানান, তার সব ধরনের পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়েছে। সিটি স্ক্যান রিপোর্টে খারাপ কিছু পাওয়া যায়নি। তবে তার মাথার বাইরের দিকে ইনজুরি রয়েছে। সবকিছু বিবেচনা করে সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য আমরা তাকে লাইফ সাপোর্টে রেখেছি।
তুহিন ফারাবির বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায়। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক।
ঢামেক হাসপাতালের ওই চিকিৎসক আরও জানান, আইসিইউতে রাখা অপর তিন জনের মধ্যে দুইজনকে (ভিপি নুর ও তার সংগঠনের কর্মী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সোহেল) কেবিনে নেওয়া হয়েছে। তবে নুরের ছোট ভাই আমিনুরকে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণ রাখা হচ্ছে।
রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে ভিপি নুর ও তার অনুসারীদের ওপর হামলা চালায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে নুরসহ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ২৪ আহত হন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় ভাংচুর করা হয় ভিপির কক্ষের কম্পিউটার, চেয়ারসহ আসবাবপত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে রাজু ভাষ্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি শেষ করে ডাকসু ভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সেখানে ভিপি নুরসহ তার অনুসারীদের সঙ্গে মঞ্চের নেতাকর্মীদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পরে মঞ্চের কিছু নেতাকর্মী নুরদের উদ্দেশে ডাকসু ভবনের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। মঞ্চের কিছু নেতাকর্মী ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় উপরে উঠতে চাইলে নুরের অনুসারীরা ডাকসু ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে দেন।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন ডাকসু ভবনের মূল ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কিছু অনুসারীও ঢুকে পড়েন ডাকসুতে। সনজিত-সাদ্দাম ভিপি নুরের কক্ষে গিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাগতদের বের করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন। কিন্তু এতে ভিপি আপত্তি জানালে উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
এ সময় ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীরা ভিপি নুরের কক্ষে থাকা তার সংগঠন ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের’ নেতাকর্মীদের এক এক করে কক্ষ থেকে বের করে দেন। সিঁড়িতে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা তখন তাদের লাঠিপেটা করেন।
এক পর্যায়ে সনজিত ও সাদ্দাম ভিপির কক্ষ থেকে বের হয়ে মধুর ক্যান্টিনের দিকে চলে যান। তারা চলে যাওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোঠা নিয়ে ভিপির কক্ষে ঢুকে লাইট বন্ধ করে নুর ও তার অনুসারীদের এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে নুরসহ আহত হন পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, রাশেদ খানসহ সংগঠনটির ২৪ নেতাকর্মী। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় তাদের বের করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com