আসুন ঐক্যবদ্ধ হই, নিজেদের সম্মান বাঁচাই

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

নিকুঞ্জ বালা পলাশ ঃ  আমার পেশা সাংবাদিকতা। ২০ বছর ধরে এ পেশায় নিজেকে জড়িয়ে রেখেছি। সাংবাদিকতা ছাড়া আমার কোন ব্যাবসা বা আয়ের অন্য কোন মাধ্যম নেই। বরিশাল বিএম কলেজে সম্মান-১ম বর্ষে অধ্যায়ন কাল থেকে এ পেশায় আমি জড়িত। আমার সাংবাদিকতায় ২০ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে মনে হয়, সম্প্রতি সময়ে বরিশালে পেশাদার কিংবা অপেশাদার কিংবা কথিত সাংবাদিক যাহাই বলিনা কেন সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন কিংবা হয়রানীর মাত্রা চরম ভাবে বেড়ে গেছে। যারা অন্যায় করবে কিংবা অপরাধ করবে তাদের বিচার হোক এটা আমরা চাই।

কিন্তু ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করা কিংবা প্রভাবশালী ও পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে আজ সাংবাদিকরা নানান ভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন বলে মনে হয়। মেয়েলি একটি ঘটনায় সম্প্রতি সময়ে উজিরপুরের সাংবাদিক (জহির)কে ফাঁশানো হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এমনকি ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল খাটছে জহির। জহিরের গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। গৌরনদীর প্রথম আলো বিশিষ্ঠ সাংবাদিক মো : জহিরুল হক জহিরকে হয়রানী করতে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।

উজিরপুরের অপর সাংবাদিক সাকিল মাহামুদ বাচ্চুকে একটি মামলায় আজ সকালে গ্রেফতার করা হলো। আমার জানামতে উজিরপুরের সাংবাদিক মো : জহির পুলিশসহ স্থানীয় রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেছে। গৌরনদীর অগ্রজ সাংবাদিক জহির উদ্দিন জহির ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে অনেক মুখরোচক সংবাদ প্রকাশ করেছেন। পুলিশও বাদ জায়নি জহিরের লেখনি থেকে। উজিরপুরের অপর সাংবাদিক সাকিল মাহামুদ বাচুচ কাউকেই ছাড়েনি। পুলিশ, রাজনীতিবিদ, প্রভাবশালী কিংবা আমজনতা। এক সময়ে সে জাতীয় দৈনিক সমকালের উজিরপুর প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় কাজ করেছে।

বর্তমানে একটি স্থানীয় পত্রিকায় কর্মরত আছে। এখান থেকে দু টাকাও সে পায় না। বরং মাস শেষে পত্রিকার বিল বাবদ তাকে ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা দিতে হয় পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে। আমরা অনেকেই তাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে হকার বলে সম্মোধন করে মুচকি হাসি। আবার সাংঘাতিক বলতেও ভুল করিনা। লেখালেখিতে সে অনেক এম এ পাশকেও ছাড়িয়ে গেছে। আমি গ্যারান্টি সহকারে বলতে পারি, চ্যালেঞ্জ ছূড়ে বলতে পারি, উজিরপুরে অনেক এম এ পাশ কিংবা ডিগ্রীধারী সাংবাদিক রয়েছেন। চ্যালেঞ্জ ছুড়লাম, নিউজ লেখায় সাকিল মাহামুদ বাচ্চুকে হাড়াতে পারবেন না বরং হাড়বেন। পারলে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করুন।

অনেকে বলবেন আমি এম এ পাশ কিংবা আইন পাশ করে কেন সাকিল মাহামুদ বাচ্চুর মতো স্ব-শিক্ষিতর পক্ষে কথা বলছি। হয়তো আমি নিজেও এর উত্তর দিতে পারবো না। এর পরও আমি তার পক্ষে কথা বলবো। কারন আমি তার সহকর্মি হিসেবে অনেক কাছ থেকে দেখেছি। আমি তার লেখার মাধ্যমে তার নিজস্ব মেধাকে খুজে পেয়েছি। আমরা অনেকেই চরম খুশি হয়েছি বাচ্চু গ্রেফতার হওয়ার পর। তার গ্রেফতার হওয়ার ছবি দেখে আমরা অনেকে পিছন থেকে হাততালি দিচ্ছি কিংবা হয়রানীকারীদের সাথে আতাত করছি। এসব করে আমরাই যে আমাদের পাতানো জালে আটকা পরছি তা নিজেরাই বুঝতে পারছি না। আজ বাচ্চু, কাল আমি কিংবা আপনিও বাচ্চুর কাতারে সামিল হতে পারেন। এ বিষয়টি আমাদের ভেবে দেখা দরকার।

আমি দেখেছি বিভিন্ন বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিকের সম্পর্ক অনেক সময় দা কুমড়ার মতো হয়ে থাকে। কিন্তু তাই বলে আমার কাউকে সায়েস্তা করতে যা মুখে আসে কিংবা মন চায় তা পত্রিকায় লিখে দিবো তা কিন্তু ঠিক নয়। অবশ্য আজকাল এমন লেখা-লেখির প্রবনতা চরম ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য আমরাই দ্বায়ী। কারন জীবনে এক অক্ষর কোন পত্রিকায় লিখেন নি, কিংবা লিখতে পারেন না কিংবা লেখার যোগ্যতা নেই এমন অনেকেই আজ বরিশালের বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক-সম্পাদক কিংবা প্রকাশক হয়েছেন।

এমন বায়োডাটা যদি পত্রিকা কর্তৃপক্ষের থাকে সেই পত্রিকায় অনেক কিছুই আমরা লিখতে পারি বা লেখা হয়ে থাকতে পারে। আবার আমি পুলিশ কিংবা প্রশাসনের লোক, আমার হাতে আইন আছে, তাই সাংবাদিককে সাইজ করতে উঠে পরে লেগে যাবো তাও ঠিক নয়। যদিও এমন ঘটনা এখন অহরক ঘটছে বলে বিভিন্ন ভাবে প্রতিয়মান হচ্ছে। তবে আমাদের সকলকেই আমাদের নিজেদের দ্বায়িত্ববোধ ও কাজের পরিধির বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার। এ বিষয়টি সাংবাদিক নেতা ও প্রশাসনের উচ্চ মহলকে ভেবে দেখার সময় এসেছে। নিজের অস্বিত্ব টিকিয়ে রাখার সময় এসেছে। তাই আসুন পেশাদার সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়, নিজেদের সম্মান বাচাই।

বি দ্র: আমি সচারাচার কোন বিষয়ে লিখি না। আজ লিখতে বাধ্য হলাম। আমার অযাচিত এ লেখায় কেউ কস্ট পেলে আমি আন্তরিক ভাবে দুখি:ত।

নিকুঞ্জ বালা পলাশ 

সম্পাদক: দৈনিক সাহসী বার্তা