#

বরিশাল কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদীসহ আসামীমের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। আমার স্বামী কবির সিকদার কখনও আত্মহত্যা করতে পারে না বলে দাবী করেন তার পরিবার। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী কারাগারে নিহত সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী কবির সিকদারের স্ত্রী হনুফা বেগম আজ ১১ মার্চ সোমবার বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবী জানান নিহতের স্ত্রী হনুফা। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘‘আমার স্বামীর মৃত্যু হত্যা নাকি আত্মহত্যা বুঝে উঠতে পারতেছি না। আমার দীর্ঘ বিশ্বাস সে কখনও আত্মহত্যা করতে পারে না। সে তার স্ত্রী সন্তানকে খুব ভালবাসতেন। দুই মেয়ে ছিল তার কলিজার টুকরা। যখনই দেখা করতাম আমাদের সব সময় সাহস দিত এবং অনেক বুঝাইতো।

কিছুদিন আগে তার সাথে দেখা করি এবং সে তার বড় মেয়েকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কয়টা দিন পরে আসতেছি বাবা। আমার জন্য দোয়া করো। সেই মানুষটা কিভাবে আত্মহত্যা করতে পারে ? যদি আত্মহত্যাই করে। তাহলে আমার প্রশ্ন ? যে কারাগারে একজন আসামীর আত্মহত্যা করার গোপন জায়গা আছে? যেখানে পুলিশের নজর পড়ে না কেন ? তারা কি দেখেও না দেখার ভান করে ? না হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয় ? তাহলে কি কারাগারে একজন আসামীর জীবনের নিরাপত্তা নেই।

তিনি বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারী তার (করিব সিকদার) সাথে দেখা করতে এসে পাঁচবার টিকিট কাটি, কিন্তু তার দেখা মেলে না। কারগার থেকে জানায় তাকে (কবির সিকদার) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কখনও বলে টিকিট হারিয়ে গেছে। যখন বিকাল চারটা বাজে তখন জানায় সে শেবাচিম হাসপাতালের প্রিজন সেলে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরপর সেখানে গেলে পুলিশ তাদেরকে ডোম ঘরের দিকে নিয়ে যায়। লাশ দেখিয়ে বলেন সে আত্মহত্যা করেছে। তাহলে সকাল থেকে কেন তারা আমাদেরকে হয়রানী করল ? অসুস্থতার কথা কেন জানায়নি ?’’ তিনি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবী জানান। সংবাদ সম্মেলনে  নিহত কবিরের নাবালিকা দুই কন্যা সন্তান মাইমুনা (৫) ও মাইসা (১) সহ তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য বরিশাল কারাগারে এক কয়েদি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, ১ মার্চ শুক্রবার কারা ভবনের রান্নাঘরে আড়ার সঙ্গে গামছা পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন কবির সিকদার (৪০) নামের এই কয়েদি। ডাকাতি মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কবির পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া কলেজ মোড় এলাকার দলিল উদ্দিনের ছেলে। জেল সুপার প্রশান্ত বলেন, “কবির কারাগারের ঝাড়ুদারের কাজ করতেন। শুক্রবার দুপুরে তাকে নির্ধারিত স্থানে না পেয়ে খুঁজতে শুরু করেন কারারক্ষীরা। পরে তাকে কারা অভ্যন্তরে বন্ধ থাকা ডিভিশন ভবনের রান্নাঘরের আড়ার সঙ্গে গামছা দিয়ে ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। “তাকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে প্রথমে জেল হাসপাতালে এবং পরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কবির আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।”

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন