আসামির ঠিকানাই পায়নি থানা, তদন্তে নেমে গ্রেফতার করলো পিবিআই

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

আসামিদের ঠিকানা খুঁজে না পাওয়ায় মাদকের একটি মামলা থেকে দুই আসামিকে অব্যাহতির জন্য আদালতে আবেদন জানায় ডিএমপির চকবাজার থানা পুলিশ। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে মামলাটির পুনরায় তদন্ত ও আসামিদের গ্রেফতারের জন্য দায়িত্ব দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। তদন্তে নেমে পলাতক দু’জনকে গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতারের পর পিবিআই জানতে পেরেছে, তাদের একজন হত্যা মামলারও আসামি।

গ্রেফতার দু’জন হলেন- সিরাজুল ইসলাম ওরফে মন্টু শেখ (৪০) ও মো. সালাম (৩১)।

শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গ্রেফতার দু’জনের মধ্যে মন্টু শেখ একটি মাদক মামলার দণ্ডিত আসামি। তার নামে একটি হত্যা মামলাও রয়েছে।

গত বছর ২১ ফেব্রুয়ারি ডিএমপির চকবাজার এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে ৩৭৫ বোতল ফেনসিডিলসহ চান মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সে সময় দুইজন পালিয়ে যায়। পরে চান মিয়া জানান, ওই দুই জনের নাম সিরাজুল ইসলাম মন্টু ও মো. সালাম।

ওই ঘটনায় চকবাজার থানায় মামলা করার পর থানা পুলিশ দুই মাস ছয়দিন তদন্ত করে। কিন্তু মন্টু ও সালামের ঠিকানা না পাওয়ার কথা জানিয়ে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে গত বছরের ১ এপ্রিল শুধু চান মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আদালত সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে ওই বছরের ৩ মে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করতে ও আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দেয়।

বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রায় সাড়ে আট মাস তদন্ত করে গত ২৫ জানুয়ারি সালামকে গ্রেফতার করেন তারা। পরে তার দেওয়া তথ্যে আট দিন পর মন্টুকে শ্যামপুর রেল লাইন থেকে গ্রেফতার করা হয়। মন্টুর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মাদকের মামলা রয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানার একটি মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি তিনি।

রাজধানীর সবুজবাগ থানার একটি হত্যা মামলাতেও মন্টুর নাম আছে জানিয়ে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একজন চালককে হত্যা করে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি মন্টু শেখ। তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে।

নাটোর, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, রাজধানীর খিলগাঁও, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন থানায় মন্টুর বিরুদ্ধে মাদকের সাতটি মামলা রয়েছে। দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের হাতেও তিনি একবার ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন।

মন্টুর বাড়ি ফরিদপুর জেলায় আলফাডাঙ্গা থানা এলাকায়। তবে দিনাজপুরে গ্রেফতার হওয়ার সময় তিনি নিজের বাড়ি নড়াইলে বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন। আর এখন তিনি থাকেন নারায়ণগঞ্জে।

ঠিকানা না থাকায় এ দুজনকে গ্রেফতার করতে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলামকে আট মাস ধরে নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম।