একদিন আগেই কুমিল্লার হাসান আলি বিপিএলের তৃতীয় সেরা বোলিং ফিগারটি করেছিল। ২০ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন এই পাকিস্তানি। হাসান আলির বিধ্বংসী বোলিংয়ের সেই রেশ কাট না কাটতেই তাকে ছাড়িয়ে গেলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। হাসান আলির বোলিং ফিগার ছিল ৩.৩-০-২০-৫। আজ রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে সাকিবও নিলেন ৫ উইকেট। তার বোলিং ফিগার ৩.৫-০-১৬-৫। বিপিএলের চলতি আসরে যা এখনও পর্যন্ত সেরা বোলিং।
বিপিএলের প্রথম দুই আসরের সেরা সাকিব আল হাসান কেন যেন পরের দুই আসরে নিজেকে খুব বেশি চেনাতে পারেননি। চতুর্থ আসরে দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারলেও নিজে ছিলেন যেন খোলসবন্দী। এবারের বিপিএল শুরুর আগেও সাকিব মিডিয়ার সামনে বলেছিলেন, দলকে চ্যাম্পিয়ন করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত লক্ষ্যও আছে ভালো করার।
কিন্তু এবারের আসরের শুরু থেকে ঢাকা ডায়নামাইটস হয়তো ভক্ত-দর্শকদের মন ভরাতে পারছে; কিন্তু সাকিব যেন সেই খোলসেই বন্দী। রংপুরের বিপক্ষে এই ম্যাচটিতে মাঠে নামার আগের ৬ ম্যাচে সাকিবের সেরা বোলিং ২২ রানে ২ উইকেট। সেটা রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে। ২ উইকেট নিয়েছেন আরও এক ম্যাচে। সিলেট পর্বে, খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে। খুলনার বিপক্ষে অন্য ম্যাচে নিয়েছেন ১ উইকেট।
সব মিলিয়ে এবারের বিপিএলে ৬ ম্যাচে নিলেন মোটে ৫ উইকেট। সাকিব আল হাসান নামটির সাথে এই পরিসংখ্যান মোটেও মানানসই নয়। ব্যাট হাতেও খুব একটা কার্যকরী ইনিংস খেলতে পারছিলেন না। মোটকথা, বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডারের কাছ থেকে যে পারফরম্যান্স ভক্তরা প্রত্যাশা করছিলেন, সেটা মোটেও দেখা যাচ্ছিল না সাকিবের কাছ থেকে।
অবশেষে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন সাকিব। এবারের আসরের আরেকটি শক্তিশালী দল রংপুর রাডার্সকে পেয়ে যেন বল হাতে জ্বলে উঠলেন সাকিব। শাহরিয়ার নাফীসকে দিয়ে শুরু। এরপর তুলে নিলেন মোহাম্মদ মিথুনকে। শেষ দিকে এসে জিয়াউর রহমান, সোহাগ গাজী এবং রুবেল হোসেনকে সাজঘরের পথ দেখান তিনি। শুধু তাই নয়, রবি বোপারার মত ব্যাটসম্যানকে রানআউট করার ক্ষেত্রে অবদান ছিল সাকিবের।
মূলতঃ সাকিব একাই রংপুরের ব্যাটিং লাইনআইপকে ধ্বংস করে দেন। একই সঙ্গে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিপিএলের এই আসরে পাঁচ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখালেন। এর আগে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে খুলনার আবু জায়েদ রাহী সর্বোচ্চ চার উইকেট নিয়েছিলেন। ৫ উইকেট পেয়েছেন কেবল হাসান আলিই। তবে সাবিকের বোলিং ফিগারটাই এই আসরের সেরা বোলিং।
সাকিব ছাড়াও বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে আরও ৮ জনের এক ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব আছে। সেরা বোলিং ফিগারটি রয়েছে পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ সামির (৬ রানে ৫ উইকেট)। আর দ্বিতীয় সেরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কেভিন কুপারের (১৫ রানে ৫ উইকেট)। এছাড়া গতবার বাংলাদেশের তরুণ অফ স্পিনার আফিফ হোসেন ধ্রুবও ২১ রানে ৫ উইকেট দখল করেছিলেন।