আসছে ৪০তম বিসিএস, নেওয়া হবে ২ হাজার

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

একটি বিশেষ বিসিএসের পর এবার আসছে ৪০তম বিসিএস। এটি সাধারণ বিসিএস হবে। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) সূত্র জানিয়েছে, খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। পিএসসি মনে করছে, এই বিসিএসেও আবেদন তিন লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

পিএসসি সূত্র জানায়, চিকিৎসকদের জন্য ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী ৩ আগস্ট এবং ৮ আগস্ট ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে। এই পরীক্ষা নেওয়ার পরই ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৪০তম বিসিএসের জন্য তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ২ হাজার ক্যাডার নিয়োগের শূন্য পদ পেয়েছে। সেই তালিকা তারা পিএসসিতে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন পিএসসি সেটির ওপর নির্ভর করে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষার আয়োজন করবে। এতে প্রশাসন ক্যাডারে ২০০ জন, পুলিশে ৭৫ জন, পররাষ্ট্রে ২৫, ইকোনমিক ক্যাডারে ৪৫, কর ক্যাডারে ২৪ জন, অডিটে ২২, শিক্ষায় দুই শতাধিক, আনসারে ১২। এ ছাড়া দীর্ঘদিন পর কাস্টমস ক্যাডারে ৩২ জন ক্যাডার নেওয়ার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ৪০তম বিসিএসের শূন্য পদের তালিকা পিএসসিতে পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এই সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘আমরা ৪০তম বিসিএস নিয়ে কাজ করছি। এখন ৩৮তম ও ৩৯তম বিসিএসের পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়েছে। ৩ আগস্ট ৩৯তম বিসিএসের পরীক্ষা নেব এবং ৮ আগস্ট ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে। ৮ থেকে ১৩ আগস্ট এই বিসিএসের আবশ্যিক বিষয়ের পরীক্ষা হবে। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঐচ্ছিক বিষয়ের পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষা শেষ হলে আমরা ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি আমাদের ওয়েবসাইটে ও পত্রিকায় প্রকাশ করব।’

মোহাম্মদ সাদিক বলেন, সেপ্টেম্বরে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে।

পিএসসি সূত্র জানায়, ৪০তম বিসিএসেও লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি খাতা দুজন পরীক্ষক মূল্যায়ন করবেন। তাঁদের নম্বরের ব্যবধান ২০ শতাংশের বেশি হলে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে খাতা পাঠানো হবে। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের মেধা যথাযথভাবে মূল্যায়িত হবে বলে মনে করছে পিএসসি। এই বিসিএস থেকে বাংলাদেশ বিষয়াবলির ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় আলাদা করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ৫০ নম্বরের প্রশ্ন রাখা হবে। কেউ চাইলে ইংরেজিতেও এই বিসিএস দিতে পারবেন। সাত বিভাগের পাশাপাশি এবার নতুন বিভাগ ময়মনসিংহেও পরীক্ষা নেওয়া হবে।

পিএসসি সূত্র জানায়, আবেদনের ক্ষেত্রে ৩৮তম বিসিএসে রেকর্ড সৃষ্টি হয়। এতে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন। এর আগে ৩৭তম বিসিএসে অংশ নেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৬ জন পরীক্ষার্থী। পিএসসি মনে করছে, সরকারি চাকরি, বিশেষ করে বিসিএসের ক্ষেত্রে তরুণদের আগ্রহ আগের থেকে বেড়েছে। তাই ৩৮তম বিসিএসে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন। ৩৮তম বিসিএসের মতোই ৪০তম বিসিএসেও আবেদন তিন লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

বিসিএসে আবেদন বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে বেতন বেড়েছে বলে এর প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। তাই আবেদনও বেশি জমা পড়ছে।’

৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ২ হাজার ২৪ জন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০, পুলিশ ক্যাডারের ১০০টি পদসহ ৩৮তম বিসিএসে সাধারণ ক্যাডারে মোট ৫২০টি, কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে ৫৪৯টি এবং শিক্ষা ক্যাডারে ৯৫৫টি পদ থাকছে। এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ হয়। এতে ১৬ হাজার ২৮৬ জন ৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাঁরা এখন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

এ ছাড়া ৩৯তম বিসিএসে ৪ হাজার ৫৪২ জন সহকারী সার্জন আর ২৫০ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন নেওয়া হবে। সব মিলে প্রায় পাঁচ হাজার চিকিৎসক নেওয়া হবে এই বিসিএসে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ৩৯তম বিসিএসে প্রায় ৪০ হাজার প্রার্থী আবেদন করেছেন। মোট ৩৯ হাজার ৯৫৪ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে এমসিকিউ ধরনের লিখিত পরীক্ষা হবে। এতে ২০০ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এ ছাড়া ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা হবে।

মেডিকেল সায়েন্স বা ডেন্টাল সায়েন্স বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এ ছাড়া বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে ২০ নম্বর করে এবং মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তিতে ১০ নম্বর করে মোট ২০০ নম্বরের দুই ঘণ্টার এমসিকিউ ধরনের লিখিত পরীক্ষা হবে। প্রতি এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক উত্তরের জন্য এক নম্বর দেওয়া হবে। তবে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা হবে শূন্য দশমিক ৫০ নম্বর। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর পিএসসি নির্ধারণ করবে। মৌখিক পরীক্ষার পাস নম্বর ধরা হয়েছে ৫০। লিখিত পরীক্ষা শুধু ঢাকায় হবে।