আলোর মুখ দেখছে বিমানবন্দর-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

:
: ৭ years ago

জানজট কমাতে রাজধানীর বিমান বন্দর থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে হবে। দীর্ঘসময় থেকে এ নিয়ে আলাপ আলোচনা হলেও এখন আলোর মুখ দেখছে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প চুড়ান্ত অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন হতে যাচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এ প্রকল্প নির্মাণে আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৯০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার ৯৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা ঋণ দেবে চায়না এক্সিম ব্যাংক। বাকি ৫ হাজার ৯৫১ কোটি ৪১ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। চলতি বছর থেকে ২০২২ সাল নাগাদ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।

জানা গেছে, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ হলে ঢাকা ও এর পাশের আশুলিয়া অংশের যানজট নিরসন কমে আসবে। এ ছাড়া ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তর ও পশ্চিমের অন্তত ৩০টি জেলার যোগাযোগব্যবস্থা অত্যন্ত সহজ হবে। উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীদের ঢাকা ছাড়ার জন্য গাবতলী, সাভার ও চন্দ্রায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকার প্রয়োজন হবে না। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ঢাকা থেকে চন্দ্রা পৌঁছে যাবে এসব গাড়ি।

কেকনা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন এলাকা ধরা হয়েছে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় পয়ৃন্ত এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মিত হবে। যার সুফল ভোগ করতে পারবেন রাজধানীবাসীও।

সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পের প্রকল্পের নকশা নকশা আগেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী সময়মতোই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পটির মাধ্যমে রাজধানীর যানজট অনেকটাই কমে যাবে। যার সুফল পড়বে রাজধানীর জীবনযাত্রায়।

জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় ১০ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ র‌্যাম্প থাকবে, নবীনগর ইন্টারসেকশনে থাকবে ১ দশমিক ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার, বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজন অনুসারে ২ দশমিক ৭২ কিলোমিটার সেতু ও ১৮ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনাও থাকবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটিতে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় ঢাকা-আশুলিয়া সড়কের পাশ দিয়ে একটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের এপ্রিলে এ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবটিকে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পিপিপির ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।

এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৩ সালে প্রকল্পের প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চালায়। এতে বিমানবন্দর সড়ক থেকে আব্দুল্লাপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর ইন্টারসেকশন ও ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা ইন্টারসেকশন পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। পরে দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত সমীক্ষায় এর দৈর্ঘ্য কমিয়ে ২৪ কিলোমিটার করার প্রস্তাব করা হয়।

পরিকল্পনা কমিশনে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ এ প্রসঙ্গে বলেন, ঢাকা এলিভিটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের জন্য এর আগে প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন এবং ইউটিলিটি রিলোকেশন করা হয়েছে। এখন প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সেতু বিভাগের প্রস্তাব বিবেচনায় আনা হয়েছে। যানজট নিরসনে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ বিবেচনা প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।