সিনেমা নয়, বাস্তবেই এ যেন আরেক ‘আয়নাবাজি’। নাম, পরিচয় পাল্টে আরেকজনের পাওয়া সরকারি চাকরি দিব্যি ২২ বছর ধরে করছেন তাজুল ইসলাম। চলছিল ভালোই। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রের কারণে হঠাৎ করেই নড়ে ওঠে ধর্মের কল। জারিজুরি ফাঁস হয়ে যায় তাজুল ইসলামের।
অভিযুক্ত কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দক্ষিণ শশিদল গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে। বয়স ৪২।
২০০১ সালে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার শাহজাহানপুর গ্রামের মো. মঈন উদ্দিন কারারক্ষী পরীক্ষায় নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তার নিয়োগপত্র ডাকযোগে প্রেরণ করে কর্তৃপক্ষ। সেই নিয়োগপত্র নিয়ে তাজুল ইসলাম মঈন উদ্দিনের বাড়ি গিয়ে নিজেকে কারারক্ষী অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি নিয়োগপত্র পেতে হলে টাকা লাগবে বলে জানান। কিন্তু মঈন উদ্দিন ঘুষের বিনিময়ে চাকরি পেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাজুল ইসলামকে ফিরিয়ে দেন।
এবার প্রতারক তাজুল ইসলাম অন্য বুদ্ধি আঁটেন। তিনি নিজেই মঈন উদ্দিন সেজে চাকরিতে যোগ দেন। এরপর ২০১৫ সালে স্কেলজনিত কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হলে, তাজুল ইসলাম মঈন উদ্দিনের নাম ঠিকানা দিয়ে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন এবং অফিসে জমা দেন।
পরে ২০২০ সালে, সিলেট বিভাগে ২০০ জন কারারক্ষী সিলেটের স্থায়ী বাসিন্দা না-হয়েও চাকরি করছেন এমন খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। শুরু হয় যাচাইবাছাই। এরই ধারাবাহিকতায় মঈন উদ্দিনের নাম ঠিকানা যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়- প্রকৃত মঈন উদ্দিন বর্তমানে ফার্মেসীর দোকানে কাজ করছেন।
এরপর বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে র্যাবের বিশেষ অভিযানে নিজ এলাকা থেকে তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার সকালে কুমিল্লা নগরীর শাকতলা র্যাব-১১ সিপিসি-২ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব -১১ সিপিসি-২ কোম্পানি অধিনায়ক সাকিব আহমেদ।
এ সময় তাজুল ইসলামের কাছ থেকে তিন সেট কারারক্ষী ইউনিফর্ম, একটি কারারক্ষী জ্যাকেট, রেইনকোট, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, মঈন উদ্দিন ২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর চাকরিতে যোগদানের আবেদন করেন। এ সময় তাজুল ইসলাম তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন এবং চাকরি পেতে হলে ১০ লাখ টাকা লাগবে বলে জানান। মঈন উদ্দিন এতে অস্বীকৃতি জানান এবং এক পর্যায়ে উচ্চ আদালতের দারস্থ হন।
মঈন উদ্দিন খান বলেন, আমি আমার চাকরি ফিরে পেতে চাই। যার কারণে আমি দীর্ঘ ২২ বছর সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি প্রশাসনের সহযোগিতায় তার উপযুক্ত শাস্তি চাই।
কুমিল্লা র্যাব কমান্ডার মেজর সাকিব জানান, তাজুল ইসলাম প্রকৃত নাম ঠিকানা গোপন করে মঈন উদ্দিন খানের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করাসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছিল। আসামিকে মামলার তদন্ত পরিচালনাকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হবে।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com