আমি বক্তৃতার থেকে কাজে বেশি বিশ্বাস করি : পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক-এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সোনার বাংলার সপ্ন দেখেছিলেন।
যে সপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা, মানবতার মা, জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।আজ দেশের যতো উন্নয়ন দেখছেন সবই সম্ভব হয়েছে আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে।

আজ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাই-বোনদের যে বিভিন্ন ধরণের ভাতা দেয়া হচ্ছে, এগুলো সবকিছুই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কারনে। আর তার মানবতার দৃস্টির কারনেই ভাতাগুলো দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।বাংলাদেশে বর্তমানে এমন কোন দিক নেই যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভাতা দিচ্ছে না।
সেটা বিধবা ভাতা হোক,বয়স্ক ভাতা হোক, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাতা হোক আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ভাতা হোক।সবকিছুই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে বাড়ানো হয়।

ডিজিটাল সাদাছড়ি, নিরাপদে পথ চলি এই স্লোগানে শনিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বরিশাল সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে ৫৩ তম বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাদাছড়ি বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২১ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম-এমপি এসব কথা বলেন।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধি সংস্থার বরিশালের নেতৃবৃন্দর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য যতো ধরণের সহায়তা দেয়া দরকার আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে সে সাহায্যগুলো দেয়ার চেষ্টা করবো।
আমি দুই বছর আগে একটি অনুষ্ঠানে এসে বলেছিলাম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাইবোনদেরকে সাদাছড়ি বিতরণ করার কথা। আজ সেই প্রতিশ্রুতি পালন করার জন্যই আমি উপস্থিত হয়েছি।
সরকারের পক্ষ থেকে যে জায়গা দেয়া হয়েছে সেটি ভরাটের জন্য জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধি সংস্থার বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক অনুরোধ জানিয়েছিলো। সেটি ভরাটের জন্য আমরা অর্থ বরাদ্দ করেছি এবং সেই সেই জায়গাতে যাওয়ার জন্য খালের ওপর যে কালভার্টের প্রয়োজন ছিলো সেটিও দিয়েছি।
আর অফিস ভবনের যে কথা বলা হয়েছে, তার জন্য সমাজকল্যান মন্ত্রীর সাথে কথা বলে বরাদ্দ দেয়ার চেষ্টা করবো। যদি বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারনে মন্ত্রী মহোদয় না পারেন, ছোট আকারে হলেও একটি অফিসের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের যে গুনাবলি আছে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সমাজে যারা আমরা ভালো অবস্থানে আছি তারা যদি সহযোগীতার হাত বাড়াতে পারি তাহলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা বর্তমানের থেকেও অনেক ভালো থাকতে পারবে।

যুব সমাজসহ বরিশালের সকলের প্রতি আহবান জানাই- রাস্তায় যদি কোন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ দেখেন, তাহলে সবার আগে তাকে এগিয়ে দিবেন।যাতে করে সে নিরাপদে সবার আগে রাস্তাটা পার হতে পারে। এছাড়া যতো ধরণের সাহায্য করা সম্ভব তা করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের মন মানসিকতার উন্নয়ন করতে হবে।যাতে করে আমরা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের আমরা সহযোগীতা করতে পারি। তাদের প্রতি সহযোগীতার হাত প্রসারিত করতে পারি। আমরা বক্তৃতায় অনেক কথা বলি কিন্তু কাজের বেলায় সে কাজটা করিনা।

আমি মনে করি বক্তৃতার থেকে কাজে বেশি বিশ্বাস করি। আমাদের বরিশালের জেলা প্রশাসক বলেছেন, তিনি প্রচার বিমুখ হলেও কাজ করতে বেশি আনন্দবোধ করেন।

তিনি বলেছেন,সমাজকল্যানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ওখানে ৭ বার গিয়েছিলো এবং অন্যান্যদের কাছে ২০ বার গিয়েছেন। এটা থেকে প্রমান হয় তিনি মনের দিক থেকেই আপনাদের সহযোগীতা করার জন্য আছেন।লোক দেখানোর জন্য ২০ বার কেউ যায়না, সেজন্য একবার দুবার যেতে পারে।

যে ২০ বার যায় সেখান থেকে প্রমান হয় আমাদের জেলা প্রশাসক বিশাল মনের অধিকারী। আপনাদের কষ্ট,ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের জন্য তার অফিসের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে এটাও তিনি বলেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকলে মিলে আমরা যদি প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের সাহায্য করতে পারি,তাহলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার সপ্ন এবং প্রধানমন্ত্রী যে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সে লক্ষে এগিয়ে যেতে পারবো।

সমাজে যারা পিছিয়ে আছে তাদের নিয়ে যদি অগ্রসর না হতে পারি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে লক্ষ ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধশালী দেশের কাতারে পৌছাতে পারবো না।আমাদের সে লক্ষ্যে পৌছাতে চাইলে সমাজের সকলকে নিয়ে এগুতে হবে।

জেলা প্রশাসন এবং বরিশাল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধি সংস্থা বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি আইউব আলী হাওলাদার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুনিবুর রহমান, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আল-মামুন তালুকদার, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী মিরাজ মাহমুদ, বরিশাল সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোঃ মাহবুবুর রহমান মধু, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ প্রমুখ।

এরআগে শুরুতে সঙ্গীতা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সুচনা করা হয়। পরে অতিথিরা দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন।

এছাড়া জেলার ২ শতাধিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এমপির পক্ষ থেকে সাদাছড়ি ও শাড়ি বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি অমৃত গ্রুপ অব কোম্পানি এর পক্ষ দুপুরে খাবার ও টিশার্ট বিতরণ করা হয়।