নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কঠোর সমলোচনা করেছেন। সেইসঙ্গে সাংবাদিকদেরও সমালোচনা করেছেন তিনি।
প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে মেয়র আইভী বলেন, প্রশাসনের কর্তা হয়ে নিরপেক্ষ না থেকে একটি বিশেষ মহলের সঙ্গে আঁতাত করে নানা ধরনের সুবিধা নিচ্ছে প্রশাসনের লোকজন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী শিশু ও নারী উন্নয়ন বিষয়ক রিপোর্টিং প্রশিক্ষণের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মেয়র আইভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই কাউকে বলে দেননি নারায়ণগঞ্জ গিয়ে অবৈধ স্ট্যান্ড বসাও। এখানে যারাই আসছে তারাই সেসব কাজ করছে। অনেক সাংবাদিক এ ব্যাপারে লিখছেন না। জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার কী করছেন তাও লিখেন না সাংবাদিকরা।
তিনি বলেন, শহরের অনেক স্থানে স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে। অনেক গাড়ি রাস্তার ওপর রাখা হচ্ছে। ওসব গাড়িতে এমপির নাম লেখা। কিন্তু এসব নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করছে না। এসব পরিবহন ও স্ট্যান্ডের কারণে শহরে যানজট হচ্ছে। কোন ব্যক্তি বিশেষের নাম ব্যবহার করে পরিবহন দিয়ে সড়ক দখল করা রোধ করতে হবে। মানুষকে জাগাতে সাংবাদিকদের দায়িত্ব বেশি। সাংবাদিকদের পজেটিভ যেমন লেখা উচিত তেমনি নেগেটিভ নিউজও লেখা উচিত।
মেয়র আইভী বলেন, আমি অনেক সাংবাদিকের ফোন ধরি না। কারণ অনেক সময় আমার বক্তব্য যা নেয়া হয় তা যথার্থভাবে প্রকাশ করা হয় না। কখনও কখনও সেটা টুইস্ট করা হয়। কারও বিরুদ্ধে কোনো নিউজ করতে হলে প্রয়োজন বক্তব্য নেয়া, প্রকৃত সত্য জেনে নেয়া। সেটি কখনও করা হয় না।
ফুটপাতে হকার বসানো নিয়ে আইভী বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ শহরকে হকারমুক্ত করার ঘোষণা দেই নাই। আমি বলেছি বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসবে না। অন্য সড়কে কিন্তু ঠিকই হকার বসছে। যদিও আমি ৬শ হকারের জন্য মার্কেট করেছি।
মেয়র আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরে অনেকের অবৈধ স্ট্যান্ডসহ অনেক কিছুই আছে। তা নিয়ে লিখতে হবে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে অনেক সাংবাদিক লিখছেন না। অনেক সাংবাদিক ভয় পান তাই লিখেন না। কিংবা লেখার শক্তি নাই।
তিনি বলেন, একজন নারী হয়েও প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। অথচ বিষয়টি এমন না যে আপনাদের কোনো সমস্যা হয়েছে কিন্তু মেয়র আসেনি। আমি সবসময় আছি। ভয়ে চুপচাপ থাকা ঠিক না। ভবিষ্যতে আপনাদের কাছে না পেলে আর প্রতিবাদ করবো না।
প্রশিক্ষণের সনদপত্র বিতরণে পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীরের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও সাংবাদিক রোবায়েত ফেরদৌস, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফউদ্দিন সবুজ ও সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি প্রমুখ।