দুয়ান অলিভিয়েরের এক বাউন্সারেই মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান মুশফিক। যা তাকে পরে হাসপাতালেও পাঠিয়েছে। তবে, আড়াইদিনেই ইনিংস ও ২৫৪ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয়ের পর মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে জানালেন, পরাজয়ের দায় স্বীকার করে নিচ্ছেন। তবে, নেতৃত্ব নিয়ে যে গুঞ্জন উঠেছে, আপাতত তা থেকে সরে দাঁড়াবেন না।
মুশফিক অভিযোগ করেন, ‘যখন দল সাফল্য পায়, তখন সব কৃতিত্ব চলে যায় ম্যানেজমেন্টের কাছে। আর দল খারাপ করলে এর জন্য দায়ী অধিনায়ক। আমি এ সব মেনে নিয়েছি।’
অধিনায়ক হিসেবে নিজের ওপর সব দায় এসে পড়ছে স্বীকার করে মুশফিক বলেন, ‘অবশ্যই, অধিনায়ক হিসেবে তো সব দায়-দায়িত্ব আমার ওপরই এসে পড়ে। আগামী টেস্ট সিরিজের আগে এখনও অনেক সময় হাতে আছে। সুতরাং, বোর্ডই সিদ্ধান্ত নেবে আমার ব্যাপারে। এটা তো এমন নয় যে আমি কী চাচ্ছি, তা হবে। অধিনায়ক হিসেবে থাকছি কি না এই সিদ্ধান্ত আমার নয়। কিংবা এটা (নেতৃত্ব) ছেড়েও যাচ্ছি না। বোর্ডই সিদ্ধান্ত নেবে। আমার বিশ্বাস, বোর্ড ভালো একজনকেই এ জন্য নির্বাচন করবে। দেশ সবার আগে। ব্যক্তি নয়।’
২০১১ সালে সব ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন মুশফিক। ২০১৩ সালে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। পরে তাকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে আবার নেতৃত্বে রাখা হয়। তবে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে মুশফিককে শুধু টেস্ট অধিনায়ক রেখে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব দেয়া হয় মাশরাফিকে।
৬ বছরের অধিনায়কত্বে মুশফিক অন্তত বুঝেছেন কাজটা সহজ নয়। অনেক কঠিন। তিনি বলেন, ‘অধিনায়কত্ব সব সময়েই চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে আমাদের মত দলের নেতৃত্ব দেয়াটা। আমরা সব সময় র্যাংকিংয়ে ৯ কিংবা ১০ নম্বরে থাকি। এ কারণে শীর্ষ দলগুলোর বিপক্ষে খেলতে নামলে দারুণ চাপের মধ্যে থাকতে হয়, সব সময়। গত কয়েকবছর আমরা যেভাবে খেলেছি, শেষ দুই টেস্ট সেভাবে হয়নি।’
পচেফস্ট্রম এবং ব্লুমফন্টেইনে টস জিতে ব্যাটিং না নেয়ার সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। এমনকি বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন পর্যন্ত এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে মুশফিক বলেন, ‘দোষ তো আমার দিকেই আসবে। কারণ, দুই টেস্টেই ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি। সম্ভবত আমি নেতৃত্বটা ঠিকভাবে করতে পারিনি। এ কারণে দলও ভালো করতে পারেনি। এ কারণেই আমি বলেছি, যে সুযোগ পেলে এই ভুল শোধরানোর চেষ্টা করবো।’
বিসিবি প্রেসিডেন্টের বক্তব্য শোনেননি জানিয়ে মুশফিক বলেন, ‘বিসিবি থেকে এখনও আমি কিছু শুনিনি। সত্যি করে বলছি, আমার সিদ্ধান্তের কারণে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকে, তাহলে তার কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। দলের খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য আমার কাছে কোনো অজুহাত নেই। আমি সব সময়ই দলকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করি এবং সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করি। তবে আমিও তো মানুষ। আমারও তো ভুল হতে পারে।’
হাথুরুসিংহের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কিছুই বলেননি মুশফিক। শুধু বলেছেন, ‘এ বিষয়ে তার কাছ থেকেই শোনা সবচেয়ে ভালো। কারণ, আমি চেষ্টা করি সব সময় আমার নিজের সেরাটা দেয়ার জন্য। টিম ম্যানেজমেন্টও চেষ্টা করে তাদের সেরাটা দেয়ার।’