বর্তমান সরকারের শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘আমার শাসনামলে মানুষ নিরাপদে ছিল। খুন হতো না। আর এখন খুনের মহোৎসব চলছে। নারী ও শিশু ধর্ষণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এর ফলে আমরা সবাই ধর্ষিত হচ্ছি।’ তিনি বলেন, নারী হয়ে জন্ম নেওয়াটাই যেন অভিশাপ।
আজ রোববার দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘বর্তমানে সর্বত্র দলীয়করণ, লুটপাট। ব্যাংকে টাকা নেই। নির্বাহী বিভাগ কারও কথা শোনে না। দেশের মানুষ অশান্তিতে আছে। অস্থিরতার মধ্যে বাস করছে। মানুষের শ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষ মুক্তি চায়, মানুষ পরিবর্তন চায়।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘ছিয়ানব্বই সালে আমাদের সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর আমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেছে। আমার দল ভাঙা হয়েছে। আর বিএনপির সরকারের শাসনামলে আমাকে জেলখানায় নেওয়া হয়। আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। আমাকে ইফতার করতে দেওয়া হয়নি। আল্লাহর রহমতে জনগণের ভালোবাসায় আমি বেঁচে আছি, ভালো আছি।’
প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘হাসিনার কথা ছাড়া এখন কিছু নড়ে না। একদলীয় শাসন চাই না, জনগণের শাসন চাই। দুঃশাসনের বেড়াজাল ভেঙে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এবার সেই সুযোগ এসেছে।’
রংপুর অঞ্চলের জাতীয় পার্টির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে এরশাদ বলেন, ‘রংপুর ছিল জাতীয় পার্টির দুর্গ, এখন নেই। আসন কমে গেছে। সে আসন ফিরিয়ে আনতে হবে। সামনে নির্বাচন, এ নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে হবে। ২২টি আসন পেলে আমরা এবার ক্ষমতায় যাব।’
দেশে মাদকদ্রব্যের বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করে এইচ এম এরশাদ বলেন, ‘আমার সময়ে ইয়াবা নামে কোনো মাদক ছিল না। এখন চায়ের দোকানেও মাদক পাওয়া যায়। মাদক তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।’
বক্তব্য শেষে এরশাদ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের মিঠাপুকুর উপজেলা সভাপতি এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীরের নাম ঘোষণা করেন।
জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব সাংসদ এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এ ইয়াসিরসহ উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা বক্তব্য দেন।