আমরা ঘটনার পুরো ভিডিও দেখতে চাই :বরিশাল সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ

:
: ৩ years ago

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগ আছে, আমি সাদিক আব্দুল্লাহ আছি। আওয়ামী লীগ না থাকলে আমি সাদিক আব্দুল্লাহর কোনো মূল্য নেই। আমার কারণে আওয়ামী লীগের ক্ষতি হবে, সেটি আমি কখনোই চাইবো না। যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো যদি আমার কারণে হয়ে থাকে তাহলে পদ-পদবি ছেড়ে আমি চলে যাব।

শনিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর কালিবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, আমি বলবো এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দরকার। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের চাহিদা বেশি না, ওইদিনের ঘটনার পুরো ভিডিও আমরা দেখতে চাই। সেখানে যদি আমি বা আমার দলের নেতাকর্মীরা অপরাধী হয়ে থাকি তাহলে আমার বিচার অবশ্যই করবেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, আপনারা জেনেছেন, ঘটনা যে ওয়ার্ডে সেই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। যুবলীগের এক নেতার চোখ নষ্ট হয়েছে। সুতরাং দেশ, জনগণ এবং বরিশালের মানুষের স্বার্থে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।

পুরো ঘটনা একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমার সিটি করপোরেশনে বরাদ্দ নেই। তারপরও কিন্তু উন্নয়ন থেমে নেই। মানুষের আশা আমার কাছে। সেই আশা যেন ভেঙে দেওয়া যায় সেজন্য ষড়যন্ত্র চলছিল। এক বছর আগেও আমি আপনাদের এই ষড়যন্ত্রের কথা বলেছিলাম। এমনটাতো হওয়ারই কথা ছিল। বিগত ১০ বছরে আমি প্রতিহিংসা পরায়ন রাজনীতি বরিশালে আমি করেছি কিনা সেটি আপনারা দেখেছেন। আমি যদি অন্যায় করে থাকি অবশ্যই তার বিচার হওয়া দরকার।

সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, বিগত দিনে দেখেছি সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মেয়রদের বিরুদ্ধে রাস্তায় দাঁড়ায়। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছে। আমি বরিশালের জনগণের মন জয় করতে পেরেছি কিনা জানি না, তবে করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মন জয় করতে পেরছি এই জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের উদ্দেশে আমি বলবো, বরিশালের জনগণ কোনো অপরাধ করেনি। ময়লা পরিষ্কার যদি না হয় তাহলে আমাদের জনগণের কষ্ট হবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা পরিচ্ছন্নতা চালিয়ে যাবেন।

একই সঙ্গে প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বাসায় গিয়ে খোঁজাখুঁজি করবেন না। অন্তত সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে বাধাগ্রস্ত করবেন না। এভাবে করলে আমাদের নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ভয়ে বাসার বাইরে থাকছেন। এদের উদ্দেশ্যে বলবো, আপনারা বাসায় ফিরে আসুন এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজে যোগ দিন। নগরবাসীর যেন দুর্ভোগ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ব্যানার সড়ানো বা টানানো সেটিতো আমার এখতিয়ার। ওই ব্যানার আমার দলের। সুতরাং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারতো কিছু না।

গ্রেফতারের আশঙ্কা প্রশ্নে সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, যখন ওপর থেকে নির্দেশ আসবে তখন আমার বাসায় অভিযান চালাতে হবে না। আমাকে বললেই নিজে থানায় গিয়ে বসে থাকবো। আমাকে দেশবাসী চেনে। আমিতো পালিয়ে যাবো না।

তিনি বলেন, সত্য দাবিয়ে রাখতে পারবেন না। সত্য উদঘাটিত হবেই। আমি আগেও বলেছি, আমি যদি অন্যায় করে থাকি তাহলে এই চেয়ারে থাকার কোনো অধিকার নেই। দলে এবং মেয়র পদে থাকার অধিকার তাহলে আমার নেই। এই শহরের প্রতিটি জনগণের দায়-দায়িত্ব আমার কাঁধে।

সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, গৌরনদী উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দা মুনরুন্নাহার মেরীসহ জেলার সব পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।