আমতলীর সাবেক ইউএনও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

:
: ৩ years ago

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: আমতলী উপজেলার গুলিশাখলী ইউনিয়নের উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিলী মাদরাসায় জেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়ায় আমতলীর সাবেক ইউএনওর বিরুদ্ধে আমতলীর সহকারী জজ আদালতে মামলা হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট ওই মাদরাসার মৌলুভী মো. আব্দুল মতিন বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলা ও মাদরাসা সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিলী মাদরাসার সুপার মো. আব্দুল হাই ২০২১ সালের ২৮ পেব্রæয়ারি অবসরে যান। সহকারী সুপার মো. ইউসুফ আলী চাকুরী নিয়ে অন্যত্র চলে যান।

সুপার আব্দুল হাই অবসরে যাওয়ার পর ১ মার্চ থেকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন সিনিয়র সহকারী মৌলুভি মো. মেয়াজ্জেম হোসেন।

২০২০ সালের ১৭ ফেব্রæয়ারি উচ্চ আদালতের রায়ে পরিচালনা পরিষদ স্থগিতাদেশের কারনে ওই মাদরাসায় পদাধিকার বলে আমতলী উপজেলার সাবেক সদ্য বিদায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন কালে বিদায়ী সুপারের দায়িত্ব অর্পন করা ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. মেয়াজ্জেম হোসেনকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে শিক্ষক প্যাটার্ন্টনটের ৬ নং ক্রমিকের অপেক্ষাকৃত জুনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান কবীরকে ২০২১ সালের ২মার্চ থেকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব অর্পন করেন।

এসময় ওই মাদরাসার সভাপতি আমতলীর সাবেক ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান রেজুলেশন খাতার সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে কামরুজ্জামান কবিরকে ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও মালায় উল্লেখ করেন।

জুনিয়র একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব প্রদান করায় ওই মাদরাসার সিনিয়র সহকারী মৌলুভী মো. আব্দুল মতিন খান ১৯ আগস্ট আমতলী উপজেলা সহকারী জজ আদালতে আমতলীর ইউএনও ও হাতেমপুর মাদরাসার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান, ওই মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. কামরুজ্জামান কবিরসহ ৮ জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদী হাতেমপুর কালামিয়া দাখিলী মাদরাসার সহকারী মৌলুভী মো. আব্দুল মতিন জানান, বর্তমান দায়িত্বে থাকা আমতলীর ইউএনওর নিয়োগ প্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. কামরুজ্জামানের চেয়ে আমি সিনিয়র।

কিন্তু ইউএনও আমাকে দায়িত্ব না দিয়ে কামরুজ্জমানকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দিয়েছে। আমি প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি।

বাদী পক্ষের মামলা পরিচালনা কারী আইনজীবি মো.জসিম উদ্দন মামলা দাখিলের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার মেয়াক্কেল যাতে ন্যায় বিচার পায় সে জন্য আদালতে প্রতিকার চেয়ে মামলা দাখিল করেছি।

অন্যদিকে ওই মাদরাসার বিদায়ী সুপারের দায়িত্ব দেওয়া সিনিয়র সহকারী মৌলুভি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান জুনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান কবিরকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব প্রদান করেন।

ইউএনও বিধি বহিভূত ভাবে একজন জুনিয়র সহকারী শিক্ষকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়ায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ক্ষুদ্ধ হয়ে ১৬ জুলাই বরগুনার জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

লিখিত অভিযোগের পর ৮ আগস্ট বরগুনার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার নাজমুন লায়েল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বরগুনার শিক্ষা অফিসারকে অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।

সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. মেয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমাদের মাদরাসার সভাপতি ও আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান সম্পূর্ন বেআইনি ভাবে আমাকে অব্যাহতি দিয়ে জুনিয়র একজন সহকারী শিক্ষকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দিয়েছে। আমি প্রতিকার চেয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

(০১৭৮৭০৩৪৯৯২) বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্তের চিঠি পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।