আমতলীর চাওড়া নদী বাধঁ-বরগুনার সিটিজেন জার্নালিজমে অগ্রগতির নতুন মাইলফলক!

:
: ৭ years ago
আমতলীর চাওড়া নদী বাধঁ-বরগুনার সিটিজেন জার্নালিজমে অগ্রগতির নতুন মাইলফলক!

আবদুর রহমান সালেহ.

আমতলীর (বরগুনা) চাওড়া নদীর সুবন্ধি বাঁধ। ৩০ কিলোমিটারব্যাপী দৈর্ঘ্যর একসময়ের প্রবাহমান নদীটি অপরিকল্পিতভাবে সুবন্ধি নামক স্থানে বাঁধ দেয়ার কারণে বন্ধ হয়ে যায় পানির প্রবাহ।

পানির প্রবাহ বন্ধ থাকার কারণে ৩০ কিলোমিটারের নদীজুড়ে স্তূপ জমে কচুরীপানার। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে কচুরীপানা পঁচে দুর্গন্ধ দুর্গন্ধ ছড়ায় নদী সংশ্লিষ্ট দীর্ঘ এলাকাজুড়ে। দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে জনজীবন হয়ে পড়ে অসহনীয়। কৃষিকাজ, সেচ কাজসহ সব ধরণের কাজে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে চাওড়া নদীর পানি। মশা এবং সাপের উপদ্রবও ভোগান্তির অন্যতম উপযোগ তৈরি করে।

সুবন্ধি বাঁধের ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানা যায়, গত শতাব্দির ষাটের দশকে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই বাঁধটি নির্মাণ করে। জনগণের তীব্র দাবির মুখে ১৯৮৬ সালে তৎকালীন উপজেলা প্রশাসন সুবন্ধি বাঁধ কেটে অপসারণ করে। কিন্তু ২০০৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করে পুনরায় বাঁধটি দিলে বর্তমানের সমস্যাগুলোর উদ্ভব হয়। এমনকি সুবন্ধি বাঁধ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ইউনিয়ন সহ আমতলী পৌরসভার প্রায় ৮০ হাজার মানুষের মরণফাঁদে পরিণত হয় উক্ত বাঁধ।

২০১৫ সালের শেষের দিকে মোঃ মিজানুর রহমান নামের একজন সিটিজেন জার্নালিস্ট সুবন্ধি বাঁধের সার্বিক সমস্যা উল্লেখপূর্বক বরগুনা জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত ফেসবুক গ্রুপ “সিটিজেন ভয়েস বরগুনা” গ্রুপে বিষয়টি তুলে আনে। মূলত এরপর থেকে সুবন্ধি বাঁধ নিয়ে শুরু হয় নানামুখী আলোচনার। এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার, প্রশাসন, সিটিজেন জার্নালিস্ট এবং স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সাথে দফায় দফায় আলোচনাসহ অন্যান্য কার্যক্রম।

সবগুলো মাধ্যমে তুমুল আলোচনা থাকায় বিষয়টি নজরে আসে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে। শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তদারকি। এরপর নানামুখী আলোচনা এবং বিশ্লেষণ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ শুক্রবার সন্ধ্যায় বরিশাল সার্কিট হাউজে বরগুনা জেলা প্রশাসন, আমতলীর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সিটিজেন জার্নালিস্টদের উপস্থিতিতে সুবন্ধি বাঁধের কারণে প্রকৃত সমস্যা উপলদ্ধি করা এবং সমস্যা সমাধানে কার্যকর ও সময়োপযোগী দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বরগুনা জেলা প্রশাসক মো: মোকলেচুর রহমানকে অক্টোবরের মধ্যে সুবন্ধি বাঁধ বিষয়ক করণীয় পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা দেয়ার জন্য বলেন এবং চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে সুবন্ধি বাঁধ সাময়িকভাবে কেটে দেয়াসহ কচুরীপানা অপসারণ করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন।

সুবন্ধি বাঁধ বিষয়ক উক্ত আলোচনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সচিব আবদুল মালেক,এটুআই-এর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং স্পেশালিস্ট মানিক মাহমুদ, বরিশালের জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান, বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রেভিনিউ) মোঃ মাহবুবুর রহমান, সহকারী কমিশনার দীপংকর দাশ প্রমুখ।