বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হয় আজ। রায়ের সময় নীরব হয়ে আদালতের ভেতরে দাঁড়িয়ে নিজেদেরই রায় শুনছিলেন আসামিরা। এসময় আসামিদের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আইনজীবীরা। এসময় একজন আসামি তার পক্ষের আইনজীবীকে বলেন, ‘আব্বাকে বইলেন, আমাকে নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে যেন বেশি কথা না বলে।’
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার পরপরই ২২ আসামিকে আদালতের ভেতরে অস্থায়ী কারাগারে নিয়ে (আদালত কক্ষের ডকেট) রাখা হয়। এর কিছুক্ষণ পর ১২টার ঠিক ৫ মিনিট আগে রায় পড়া শুরু করেন আদালত।
রায় ঘোষণার সময় বিচারকের দিকে তাকিয়ে নিজেদের কৃতকর্মের রায় শুনছিলেন আসামিরা। শেষে সাড়ে ১২টার দিকে এক এক করে আদালত থেকে আসামিদের বের করে আনা হয়। এসময় নীরব আসামিরা। প্রত্যেক আসামিকে শঙ্কিত অবস্থায় দেখা যায় ও তাদের চোখ ছলছল করছিল।
আদালত থেকে বের করে আনার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মনিরুজ্জামান মনিরকে তার আইনজীবী সান্ত্বনা দিয়ে বলছিলেন, ‘চিন্তা কইরো না ভাই, আমরা দেখবো’। এসময় ওই আসামি তার আইনজীবীকে বলেন ‘আব্বাকে বইলেন, আমাকে নিয়ে যেন মিডিয়ার সঙ্গে বেশি কথা না বলে।’
আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার ওরফে অপু, বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, বহিষ্কৃত উপ-সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, বহিষ্কৃত কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুজাহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ। এদের মধ্যে তিন আসামি জিসান, তানিম ও রাফিদ পলাতক।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, বহিষ্কৃত গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, বহিষ্কৃত আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা ও আকাশ হোসেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।