গর্ভের সন্তানকে হত্যাচেষ্টা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আবেদনটি করেন দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদের স্ত্রী ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা। আবেদনে আপন রিয়েল স্টেটের উপদেষ্টা মোখলেছুর রহমানকে আসামি করার জন্য বলা হয়েছে।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার বাদী ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা।

তিনি বলেন, ‘সাফাতের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে যৌথভাবে বসবাস করে আসছি। বিয়ের পর থেকে আমার শ্বশুর দিলদার আহমেদ আমাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। আমাকে তালাক দেয়ার জন্য সাফাতকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। তালাক না দিলে তাকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দেন।’

তিনি আরও বলেন, সাফাত বনানী রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর গত ৩১ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান। এরপর তাকে নির্যাতনের বিষয়গুলো অবহিত করি। এতে শ্বশুর আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। আমি আর সাফাত একসঙ্গে বসবাস করা অবস্থায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। তিনি জেলে যাওয়ার পর শ্বশুর ও তার সহযোগী মোখলেছুর রহমান আমাকে নির্যাতন করতে থাকেন।

পুত্রবধূর কাছ থেকে জোরপূর্বক প্রায় আট লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেন দিলদার আহমেদ। পিয়াসা বলেন, গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) নিয়মিত গাইনি ডাক্তার দেখানোর অংশ হিসেবে এবং সাফাতের কোর্ট হাজিরা থাকায় তাকে (সাফাত) দেখার জন্য রাত ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হই। দুই ঘণ্টা পর কেনাকাটা শেষে বাসার গেটে প্রবেশ করা মাত্র শ্বশুর ও তার সহযোগী আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এ সময় আমার কাছে থাকা দুই লাখ টাকা, গলায় থাকা পাঁচ ভরি স্বর্ণের নেকলেস, হাতে থাকা দুই ভরি স্বর্ণের চুড়ি ও দুটি হীরার আংটি; যার বাজারমূল্য আট লাখ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন। আমি বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে শ্বশুর আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এক্ষুণি বাসা থেকে বের হয়ে যা, তা নাহলে গুলি করে মেরে ফেলব।’

গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে দেয়ার চেষ্টা করেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার। এ প্রসঙ্গে পিয়াসা বলেন, ‘আমি দুই মাসের গর্ভবতী ছিলাম। আমার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করার উদ্দেশে তলপেটে লাথি মারার চেষ্টা করেন এবং ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন শ্বশুর। পরদিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে এলে আমার শ্বশুর আমাকে বলেন, আমার বাড়িতে কখনো প্রবেশ করলে তোকে জানে শেষ করে দেব। তিনি চড়-থাপ্পড় মেরে আমাকে বাসা থেকে বের করে দেন।’