শীতকালীন রবিশস্য হিসেবে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন আলু ও পিয়াজ। কিন্তু নিয়ন্ত্রণহীন বাজারে আলু-পিয়াজের দামের পার্থক্য বিস্তর। পিয়াজের দাম যেখানে আকাশছোঁয়া, তখন আলু বিক্রি হচ্ছে পানির দামে। খুলনার হাটবাজারে এখন আধামণ আলুর দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে এক কেজি পিয়াজ। এ অবস্থায় আলু চাষিরা একদিকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তেমনি পিয়াজের ঊর্ধ্বমূল্যে মানুষের মধ্যে দারুণ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, খুলনার নিউমার্কেট, সান্ধ্যবাজার ও শেখপাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পুরাতন দেশি মোটা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আর ছোট পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এসব বাজারে কিছু নতুন পিয়াজের (মুড়িকাটা পিয়াজ) আমদানি হলেও চাহিদার তুলনায় তা খুবই কম। পাশাপাশি খুলনার আলু সংরক্ষণাগার কোল্ড স্টোরেজগুলোতে প্রতি মণ পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। এতে প্রতিকেজির দাম আসে মাত্র ৫ টাকা।
খুচরা বাজারে এই আলু বিক্রি হয় ৮ থেকে ১০ টাকায়। আর নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকায়। দৌলতপুর আইস অ্যান্ড কোল্ডস্টোরেজের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী জানান, এখানকার তিনটি হিমাগারে ৫ হাজার বস্তা আলু মওজুদ আছে। মৌসুমের শুরুতে প্রতি ৯০ কেজির বস্তা বিক্রি হয়েছে ২৫০০ থেকে ২৫৫০ টাকায়। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪৫০ টাকায়। বেসরকারি চাকরীজীবী হেমায়েত হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাজারে পণ্যমূল্যের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। পরিকল্পনামাফিক নিয়মিত বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করা হলে এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হতো না।’ তবে জেলা বাজার কর্মকর্তা আ. সালাম তরফদার জানান, উৎপাদন কম হওয়ায় দেশের পিয়াজের বাজার অনেকটা ভারতীয় বাজারের ওপর নির্ভরশীল। গত সপ্তাহে ভারতে ৬০-৬৫ টাকায় পিয়াজ বিক্রি হয়েছে। লাল রঙের এই পিয়াজ তখন খুলনায় বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৯০ টাকায়। ভারতে পিয়াজের বাজার কমলে তার প্রভাব এখানে পড়বে। আর জানুয়ারির মাঝামাঝি দেশি পিয়াজ বাজারে ঢুকলে দাম অনেক কমে আসবে।