আদালতে শেফালীর ওপর দোষ চাপালেন মোমেন

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

পরকীয়ার জেরে শিশু হৃদয় হোসেনকে (৯) পুড়িয়ে হত্যার বর্ণনা দিলেন মামলার প্রধান আসামি রাশেদুল ইসলাম মোমেন। শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দিতে তিনি প্রেমিকা শেফালী বেগমের ওপর দোষ চাপান।

হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পর ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মেরাকোনা গ্রাম থেকে মোমেনকে গ্রেফতার করে চারদিনে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আবুল কাসেম জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতের জবানবন্দি দেন মোমেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ১২ এপ্রিল রাতে শেফালী বেগমের ঘরে যান তিনি। এ সময় শেফালী তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় এবং তাকে নিয়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাসের কথা বলে। তিনি কয়েকদিনের সময় চাইলে শেফালী উত্তেজিত হয়ে জানায় কোন সময় দেওয়া হবে না, যা করার আজকেই করতে হবে। সে মরবে এবং বাচ্চাদেরও মারবো। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে শেফালী ঘুমন্ত দুই শিশুকে কাথা দিয়ে পেঁচিয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই শিশু হৃদয় নিহত হয় এবং গুরুতর আহত হয় জিহাদ।

আদালতের বরাত দিয়ে এসআই মোহাম্মদ আবুল কাসেম জানান, মোমেন হত্যাকাণ্ডের জন্য তার প্রেমিকা শেফালী বেগমের ওপর দোষ চাপান।

গত ১৪ এপ্রিল একই বিচারকের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে শেফালী বলেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোমেন তার ঘরে আসে এবং রাতের খাবার খায়। ওই সময় মোমেন খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে দেয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোমেন তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরে তাকে অচেতন করে ফ্লোরে ফেলে রাখে। সে যখন চেতনা ফিরে পায় তখন বড় ছেলে হৃদয়ের আগুনে পোড়া লাশ দেখতে পায়। আর তার পাশেই ছিল কান্নারত অগ্নিদগ্ধ ছোট ছেলে জিহাদ।

আড়াইহাজারের বাড়ৈপাড়া গ্রামের টেইলার্স বিল্লাল হোসেনের ছেলে বাহরাইন প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কেরানীগঞ্জের লালাটি গ্রামের সুন্দর আলীর মেয়ে শেফালীর বিয়ে হয়। পরে তাদের দুই ছেলের জন্ম হয়। আনোয়ার বিদেশে থাকার সময় প্রতিবেশী মোমেনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন শেফালী। এর জেরেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হয় শেফালীর শিশুসন্তান হৃদয়। ঘটনার পর শেফালীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে নিহতের দাদা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।