ভারতীয় ব্যবসায়ী আদানিকে বিমানবন্দর দেওয়া নিয়ে কেনিয়ায় ধর্মঘট

লেখক:
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর নির্মাণ ও উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ী গৌতম আদানি। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেনিয়ার বিমানবন্দর কর্মচারী ইউনিয়ন। খবর ডয়েচে ভেলের।

 

কেনিয়ার এভিয়েশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের দাবি, আদানি এয়ারপোর্টস হোল্ডিংসের সঙ্গে প্রস্তাবিত চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বিদেশ থেকে কর্মী আনা হবে। এর ফলে অনেক কেনিয়ান চাকরি হারাবেন। তাই তারা সাত দিনের নোটিশ দিয়ে ধর্মঘটে যাচ্ছে। তাদের মতে, সরকার জেকেআইএ বিমানবন্দরকে বেআইনিভাবে বেচতে চাইছে।

কেনিয়ার সরকার জানায়, বিমানবন্দর বেচে দেওয়া হচ্ছে না। প্রস্তাবিত পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের উন্নয়নের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আদানির পক্ষ থেকে কোনও মুখপাত্রের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কেনিয়ার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মস এনডিয়েমা বলেছেন, আদানির সঙ্গে চুক্তি পুরোপুরি বাতিল করতে হবে। তার দাবি, কেনিয়া এয়ারপোর্টস অথরিটির (কেএএ) পুরো বোর্ডকে ইস্তফা দিতে হবে।

কেএএ জানিয়েছে, তারা ধর্মঘটের নোটিশ পেয়েছে। তবে তারা আশাবাদী যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান হবে। কর্তৃপক্ষ জানায়, আদানি গোষ্ঠী দ্বিতীয় রানওয়ে তৈরি ও যাত্রীদের জন্য টার্মিনাল উন্নয়ন করতে চায়।

সরকার গত মাসে জানিয়েছে, জেকেআইএ বিমানবন্দরে বছরে ৭৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে যাত্রীসংখ্যা বেড়ে গেছে, তাই অবকাঠামোর উন্নতির প্রয়োজন।

জেকেআইএর আধুনিকীকরণের জন্য দুইশ কোটি ডলার প্রয়োজন। বর্তমান আর্থিক অবস্থায় এ অর্থ দেওয়া সরকারের পক্ষে কঠিন। সরকার বলেছে, আদানির প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে। কোনও চুক্তি হলে দেশের স্বার্থ বজায় রাখা হবে।

গত জুনে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে তরুণরা আন্দোলনে নেমেছিল। সেই সময় আদানির সঙ্গে চুক্তির বিষয়টিও সমালোচিত হয়েছিল। গত মাসে বিক্ষোভকারীরা জেকেআইএতে ঢুকতে চেষ্টা করে, তবে পুলিশি বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনাম
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভিয়েতনামে দুটি বিমানবন্দরে বিনিয়োগ নিয়ে আদানি গোষ্ঠী চিন্তা করছে। তারা দেশটির উপকূলীয় শহর ডা নাংয়ে দুইশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে পারে। ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে গৌতম আদানির সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

হিন্দু-বিজনেসলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার তিনটি বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা আদানি গোষ্ঠীকে দেওয়ার আলোচনা চলছে। শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী হারিন ফার্নান্দো বলেছেন, বিমানবন্দর উন্নয়নের বিষয়ে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে কথা চলছে।

ভারতের আটটি বিমানবন্দর
আদানি গোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, তারা ভারতে আমেদাবাদ, লখনউ, ম্যাহ্গালুরু, জয়পুর, গুয়াহাটি ও থিরুবনন্তপুরমের বিমানবন্দর উন্নয়নের কাজ করছে। এছাড়া তাদের কাছে মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিমিটেডের ৭৩ শতাংশ ও নবি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিমিটেডের ৭৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এই আটটি বিমানবন্দরের ম্যানেজমেন্ট ও উন্নয়নের দায়িত্ব তাদের হাতে, যার অর্থ ২৫ শতাংশ যাত্রী ও ৩৩ শতাংশ পণ্য তাদের বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করে।