আত্মঘাতী গোলের কান্না

:
: ৬ years ago

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি, নেইমার বা হ্যারি কেন নন, এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতার নাম ‘আত্মঘাতী’। গোল প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে ফুটবল মহাতারকাদের পেছনে ফেলে সবার আগে এখন ‘আত্মঘাতী’। ২০১৮ বিশ্বকাপে গত বুধবার স্পেন-ইরান ম্যাচ পর্যন্ত মোট ২০টি ম্যাচে আত্মঘাতী গোল হয়েছে পাঁচটি। ইরান, ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, সেনেগাল ও স্বাগতিক রাশিয়া- এ পাঁচটি দল যার সুবিধা ভালোভাবেই লুফে নিয়েছে। গোলের লড়াইয়ে ‘আত্মঘাতী’র সবচেয়ে কাছে আছে পর্তুগালের রোনালদো (৪), রাশিয়ার ড্যানিশ চেরিশেভ (৩) ও স্পেনের দিয়েগো কস্তা (৩)। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপেই দেখা মিলল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেশি আত্মঘাতী গোলের। এর আগে ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ আত্মঘাতী গোল দেখেছিল ফুটবলবিশ্ব। সেবার পুরো আসরের ৬৪টি ম্যাচে মোট আত্মঘাতী গোল হয়েছিল ছয়টি। রাশিয়া বিশ্বকাপে এখনও ৪৪টি ম্যাচ বাকি আছে। তাই আত্মঘাতী গোলের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে এবারের বিশ্বকাপেই। ফুটবল বিশ্নেষক রজার গঞ্জালেজ তার টুইটারে আত্মঘাতী গোলের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে হ্যাশটাগে লিখেছেন, ‘গোল্ডেন বুট এবার ‘আত্মঘাতী’রই’।

এবারের বিশ্বকাপে প্রথম আত্মঘাতী গোলটির দেখা মিলে গত ১৫ জুন ইরান-মরক্কো ম্যাচে। শক্তি-সামর্থ্যে এগিয়ে থাকা মরক্কোর ফরোয়ার্ড আজিজ বুহাদ্দোজের হেডেই নিজেদের জালে বল জড়ায় মরক্কো।

এদিন গ্রুপ বি’-তে থাকা ইরান বিশ্বকাপ ইতিহাসে তাদের দ্বিতীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচে জয় পেয়েছিল তারা।

এবারের বিশ্বকাপে দ্বিতীয় আত্মঘাতী গোলটি আসে গত ১৬ জুন ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচে। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচটিতে খেলার শেষদিকে পল পগবার কিকে বল অস্ট্রেলিয়ার জালে জড়ায়। তাতেই ২-১ গোলে জয় পেয়েছিল ফ্রান্স। প্রথমে গোলটিকে সবাই পগবার গোল হিসেবে ধরে নিলেও পরে গোলটিকে আত্মঘাতী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর ফিফা ও রেফারি কমিটি গোলটিকে রিভিউ করেছিল। যেখানে দেখা যায়, অজি ডিফেন্ডার আজিজ বেহিচ পগবার কিকটি ট্যাকল করতে গেলে তার পায়ে লেগে বল ফাঁকি দেয় তাদের গোলকিপারকে। একই দিনের অপর খেলা গ্রুপ ডি-র নাইজেরিয়া-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচেও ঘটে এ দুর্ঘটনা। নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার অগ্নিকারো এতিবো ক্রোয়েশিয়ান অধিনায়ক লুকা মডরিচের করা কর্নারে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে ম্যাচটি জিতে নেয় ক্রোয়েশিয়া।

গত ১৯ জুন আত্মঘাতী গোলের চতুর্থ সাক্ষী গ্রুপ ‘এইচে’র সেনেগাল-পোল্যান্ড ম্যাচ। সেনেগাল মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গুয়ের শটে আত্মঘাতী গোল করেন পোল্যান্ডের থিয়াগো চিওনেক। ম্যাচটি সেনেগাল জিতে নেয় ২-১ গোলে। এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বশেষ আত্মঘাতী গোলটি করেন মিসরের অধিনায়ক আহমেদ ফাতহি। একই দিনে পোল্যান্ডের সঙ্গে কাঁদতে হলো তাদের। গ্রুপ ‘এ’-তে থাকা রাশিয়ার সঙ্গে খেলার দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আত্মঘাতী গোল করে এগিয়ে দেন স্বাগতিকদের।

এখন অপেক্ষা শুধু ১৫ জুলাইয়ের। কারণ সেদিনই জানা যাবে, কে হবেন সর্বোচ্চ গোলের মালিক? ‘আত্মঘাতী’ নাকি কোনো ফুটবল তারকা?