কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় লিখেছিলেন ‘ফুল ফুটুক না ফুটুক/আজ বসন্ত’। তবে গাছে গাছে সবুজ কচি পাতার নাচোন, রক্তাভ শিমুল, পলাশের উচ্ছ্বাস, আমের মঞ্জরি সাক্ষী দিচ্ছে পুষ্পপল্লবে শোভিত হয়েই আসছে ঋতুরাজ।
আজ বসন্ত, ফাল্গুনের প্রথম দিন। শীতের রুক্ষতা দূর করে প্রকৃতিতে ফুটে উঠছে বসন্তের চিরচেনা রূপ। গ্রামে তো বটেই, রাজধানীর উদ্যান এলাকায় কান পাতলে শোনা যাবে কোকিলের কুহু ডাক বা মৌমাছির গুঞ্জরণ। শহরের ফুলের দোকান, বিপণিবিতান, এমনকি অন্দরের সাজসজ্জায় লাল-হলুদের আভা। বসন্তবরণে প্রস্তুত রেস্তোরাঁগুলোও।
আজ নানান বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাঙালিরা ঋতুরাজকে বরণ করে নেবে। তরুণ-তরুণীরা নিজেকে রাঙাবে হলুদ, কমলা, বাসন্তী রঙের পোশাকে। কারও খোঁপায় ঠাঁই পাবে জারবেরা, কেউবা বেণিতে জড়াবে হলুদ গাঁদা। প্রিয়াকে ‘হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’ কোনো তরুণ হয়তো বেছে নেবেন আজকের দিনটিকেই। আবেগে ভেসে সায় দেবেন তরুণী।
প্রেমের পাশাপাশি বসন্তে ঘিরে বাঙালিদের দ্রোহ-প্রতিবাদের ইতিহাসও রয়েছে। মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার চেয়ে বাংলার তরুণেরা এই ঋতুতেই রক্ত ঝরিয়েছেন রাজপথে।
বসন্ত উদ্যাপন
বসন্তকে স্বাগত জানাতে ‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ প্রতিপাদ্যে আজ রাজধানীর চারটি মঞ্চে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছে জাতীয় বসন্ত উদ্যাপন পরিষদ। মূল আয়োজনটি হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায়। এ ছাড়া লক্ষ্মীবাজারের বাহাদুর শাহ পার্ক, ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর ও উত্তরার ৭ নম্বর পার্কের মাঠে বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠান হবে।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে গতকাল থেকেই বসন্তবরণ উৎসব শুরু হয়েছে। লালমাটিয়ার বেঙ্গল বইয়ে ‘ফাগুন সমীরণে’ শিরোনামের এ আয়োজন চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।