একুশ বছর বয়সী এক ইতালীয় নারী। তার হাত, মুখ, গলা-শরীরের সব জায়গা থেকে রক্ত ঝরছে।
রক্ত নাকি ঘাম? আসলে ঘামের মতো রক্ত। এমনটাও সম্ভব! রোগীকে দেখা মাত্র অবাক চিকিৎসকরা।
এমন অদ্ভুত রোগের কথা তাঁরা এর আগে কখনো শোনেননি। কিন্তু এমন বিদঘুটে রোগ নিয়েই ইতালির এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ওই নারী।
সিডনী মর্নি হেরাল্ডকে ওই নারী তরুণী জানান, সবসময় যে এরকমটা হয় তা নয়। কিন্তু যখন কোনও চাপে থাকেন তখনই সারা শরীল থেকে ঘামের সঙ্গে রক্ত বের হয়। এক থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই পর্ব চলে। তারপর আবার সব স্বাভাবিক হয়ে যায়। ঘাম-রক্তের আতঙ্কে নিজেকে একদম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করেই রেখেছেন ওই নারী।
যে কোনও স্থানে এই ঘামের কারণে তাঁকে অপ্রস্তুত হতে হয়। তাই নিজেকে লুকিয়ে রাখাই শ্রেয় মনে করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছেন। দেখা যাচ্ছে ঘুমের সময়, বা মহিলা যখন কোনও শারীরিক কাজ করছেন না, তখন এই ঘামের অস্তিত্ব দেখা যায় না।
এই তরুণীর অবস্থা নিয়ে গোটা চিকিৎসক মহলে বিপুল সাড়া পড়ে গিয়েছে। কানাডার মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এক জার্নালে এই অসুখের কথা প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসকরাও এ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন।
কুইনস ইউনিভার্সিটির হেমাটোলজিস্ট জ্যাকলিন ডাফিন জানাচ্ছেন, তিনি এর আগে এরকম অসুখের কথা শোনেননি। কিন্তু পরে খোঁজখবর করতে গিয়ে দেখেছেন, চিকিৎসার ইতিহাসে এ রোগ বিরল নয়। এর আগে বিশ্বে আরও অনেকে এই বিরল রোগের শিকার হয়েছেন।
আপাতত প্রেসার ও হার্টের চিকিৎসা চলছে এই নারীর। তাতে ঘামের সঙ্গে রক্ত বেরনো খানিকটা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। তবে এই চিকিৎসাতে এখনও সম্পূর্ণ সেরে ওঠেননি তিনি।