আগের সার্চ কমিটিই পাচ্ছে ডেপুটি গভর্নর খোঁজার দায়িত্ব

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) ডেপুটি গভর্নরের চারটি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন তিনজন। তাদের মধ্যে আগামী ৩১ জানুয়ারি এস কে সুর চৌধুরীর চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি হতে ডেপুটি গভর্নরের শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ গঠিত সার্চ কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

গত সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব মো. রিজওয়ানুল হুদা স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রের মাধ্যমে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সার্চ কমিটির প্রধান পিকেএসএফের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও চিঠি হাতে পাইনি। হয়তো খুব শিগগিরই পেয়ে যাবো।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় দুই ডেপুটি গভর্নরকে সরিয়ে দেয়ার পর শূন্যস্থান পূরণে ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ পিকেএসএফ চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমানকে প্রধান করে সার্চ কমিটি গঠন করে সরকার। ওই কমিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ছাড়াও রয়েছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা ইনস্টিটিউট’র (বিআইডিএস) মহাপরিচালক কে এ এস মুর্শিদ, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (ব্যাংকিং প্রশাসন) গোকুল চাঁদ দাস। কিন্তু বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব (ব্যাংকিং প্রশাসন) গোকুল চাঁদ দাসের স্থলে রয়েছেন ফজলুল হক।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে বর্তমানে তিনজন ডেপুটি গভর্নর রয়েছেন। এদের মধ্যে আগামী ৩১ জানুয়ারি এসকে সুর চৌধুরীর চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আরেক ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা রাজী হাসানের নিয়োগের মেয়াদও শেষ হচ্ছে নতুন বছরের মাঝামাঝি। অপর ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামানের মেয়াদ রয়েছে আগামী ২০১৯ সাল পর্যন্ত।

সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির আগ পর্যন্ত চারজন ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশের পর ২০১৬ সালের মার্চ মাসে সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করেন। একই দিনে এবং একই ইস্যুতে দু’জন ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম ও নাজনীন সুলতানার চুক্তি বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

ওই সময় নতুন ডেপুটি গভর্নর নিয়োগে অর্থ মন্ত্রণালয় গঠিত সার্চ কমিটি তিনজনের একটি প্যানেল তৈরি করে। কিন্তু দু’জনের নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ থাকায় প্যানেলটি বাতিল করা হয়। পরে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটি আবার পাঁচজনের প্যানেল তৈরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের মার্চে প্রথম আবেদন আহ্বান করা হয়। তাতে বলা হয়, ২০১৬ সালের ১ জুন পর্যন্ত যাদের বয়স ৬০ বছর অতিক্রম করবে না তারা আবেদন করতে পারবেন। সে অনুযায়ী যাচাই-বাছাই শেষে সার্চ কমিটি তিনজনের নাম সুপারিশ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। কিন্তু মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অনুমোদন করেনি।

এরপর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় দফায় বিজ্ঞপ্তিতে ৬০ বছরের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এ সিদ্ধান্তে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বলা হয়, বিশেষ কাউকে নিয়োগের জন্য বয়সসীমা সংশোধন করা হয়েছে। পরে সার্চ কমিটির প্রস্তাব অনুসারে ডেপুটি গভর্নর পদে এসএম মনিরুজ্জামানকে নিয়োগ দেয়া হয়।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ ডেপুটি গভর্নর (ডিজি) নিয়োগের কোনো নীতিমালা নেই। এমন কোনো উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে না। তবে আইনে বলা আছে, সরকার ডিজি নিয়োগ দেবে। যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষপর্যায়ের এ পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে সার্চ কমিটির মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও অবস্থা একই। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজি নিয়োগের জন্য একটি নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। এতে গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।