আগুন নেভাতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন ফায়ার ফাইটাররা

:
: ১ বছর আগে

ভোরে সেহরি খেয়ে ঘুমিয়েছিলেন সবাই। সকাল হতে না হতেই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সবগুলো ইউনিটে জরুরি সাইরেন বেজে ওঠে। সাইরেন শুনে ঘুমিয়ে থাকা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মুহূর্তেই ইউনিফর্ম পরে গাড়িতে উঠে বসেন।

এরপর রাজধানীর বঙ্গবাজারে লাগা ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রাণপণে কাজ শুরু করেন। তবে ভোরের অন্ধকার কাটিয়ে সূর্যের দেখা মিললেও ৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি ভয়াবহ আগুন।

 

সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট। টানা পাঁচ ঘণ্টা আগুনে কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বেশিরভাগ সদস্য। অনেকে রোজা রাখলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে এসে পানি পিপাসায় কেউ কেউ রোজা ভাঙতে বাধ্য হন।

ফায়ার সার্ভিস কর্মী নাজমুল ইসলাম  বলেন, ‘সেহরি খাওয়া শেষে ঘুমিয়েছিলাম। ৬ টার পর হঠাৎ জরুরি বেলের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। পরে দ্রুত গাড়িতে উঠে চলে আসি বঙ্গবাজারে। প্রায় টানা পাঁচ ঘণ্টা কাজ করে অনেকটা ক্লান্ত। আগুন লাগা ভবনে প্রচুর তাপ থাকায় গলা শুকিয়ে যায়। বাইরে এসে পানি খেয়ে রোজা ভাঙতে বাধ্য হয়েছি।’

 

আব্দুল কাদির নামের আরেক সদস্য বলেন, ‘রোজা রেখে এমন আগুনে কাজ করা খুবই কষ্টসাধ্য। বাধ্য হয়ে রোজা ভাঙতে হয়েছে।’

 

শুধু ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাই নন, ঘটনাস্থলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), র্যাব, বিজিবি, আনসার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

এছাড়া সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করছেন।

 

এদিকে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- মো. আতিকুর রহমান রাজন (৩৫), মো. রবিউল ইসলাম অন্তর (৩৮) ও মো. মেহেদী হাসান (৩৫)। তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিটিউটের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ভোর ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। সংবাদ পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৬টা ১২ মিনিটে। পর্যায়ক্রমে একের পর এক ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছে।