ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির একটি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। রোববার ভোর ৫টা ২২ মিনিটের দিকে উত্তর দিল্লির আনাজ মান্ডি এলাকায় ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কারখানার শ্রমিকরা যখন ভেতরে গভীর ঘুমে নিমগ্ন ছিলেন; ঠিক তখনই সেখানে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে।
মুহূর্তের মধ্যে আগুনের কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় উত্তর দিল্লির আকাশ। আগুনে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দেশটির ফায়ার সার্ভিসের কয়েক ডজন সদস্য ও একাধিক ইউনিট মোতায়েন করা হয়। উদ্ধারকাজ দ্রুত হওয়ায় প্রাণহানির সংখ্যা বাড়েনি বলে দাবি করেছেন দেশটির ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
তবে এই উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই ভবনটির ভেতরে ঢুকে একাই অন্তত ১১ শ্রমিককে উদ্ধার করেছেন। উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের এই সদস্য। উদ্ধারকাজে ব্যাপক সাহসিকতা দেখিয়ে দেশজুড়ে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ভবনটিতে প্রবেশের জন্য ফায়ার সার্ভিসের সদস্য রাজেশ শুকলা যদি সাজ সরঞ্জামের জন্য অপেক্ষা করতেন তাহলে কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারতো।
শুকলাই ফায়ার সার্ভিসের প্রথম সদস্য; যিনি অগ্নিকাণ্ডের শিকার উত্তর দিল্লির আনাজ মাণ্ডির ভবনটিতে সবার আগে প্রবেশ করেন। কাগজ এবং ব্যাগের ওই কারখানাটি যখন আগুনে ঢেকে যাচ্ছিল; তখনই ভবনের ভেতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক এক করে এগারো জনকে বের করে আনেন।
এই উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় পায়ে গুরুতর জখম হয় শুকলার। এ সময় তিনি ছাড়াও দেশটির ফায়ার সার্ভিসের অন্য বেশ কয়েকজন সদস্যও ভবনটির ভেতরে অবচেতন কয়েকজন সদস্যকে পিঠে নিয়ে বের করে আনেন।
সরকারি এই কর্মকর্তার সাহসী উদ্ধার তৎপরতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন দিল্লির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সত্তেন্দ্র জৈন। আহত শুকলা বর্তমানে দিল্লির এলএনজিপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন; সেখানে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন মন্ত্রী জৈন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফায়ার সার্ভিসের ওই সদস্যের একটি ছবি টুইটারে টুইট করে মন্ত্রী সত্তেন্দ্র জৈন লিখেছেন, ফায়ারম্যান রাজেশ শুকলাই আসল নায়ক। আগুনস্থলে প্রথম তিনিই প্রবেশ করেন এবং ১১ জনের প্রাণ বাঁচান। হাড়ে চোট পাওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চালিয়েছেন তিনি। সাহসী এই বীরকে স্যালুট।
রোববার ভোর ৫টা ২২ মিনিটের দিকে উত্তর দিল্লির আনাজ মাণ্ডির একটি কারখানায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন দেশটির কর্মকর্তারা।