আখেরাতের খেয়াল-ধ্যান অন্তরে জায়গা দেন-উদ্বোধনী বয়ানে চরমোনাই পীর

:
: ১ বছর আগে

আম বয়ানের মধ্যদিয়ে ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই দরবার শরিফের মাদরাসা ময়দানে ফাল্গুন মাসের মাহফিল শুরু হয়েছে। মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর ছাহেব উদ্বোধনী বয়ান করেন।

উদ্বোধনী বয়ানে চরমোনাই পীর বলেন, চরমোনাই মাহফিল দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে নয়। পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই প্রতি বছর চরমোনাইয়ে মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এখানে দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্যে নিয়ে যদি কেউ এসে থাকেন তাহলে তাকে নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধি করতে হবে।

সৈয়দ মো. রেজাউল করীম বলেন, ‘চরমোনাইয়ে যারা নতুন এসেছেন, তারা দুনিয়ার ধ্যান-খেয়াল বিদায় করে আখেরাতের খেয়াল-ধ্যান অন্তরে জায়গা দেন। দিল থেকে বড়ত্ব এবং আমিত্ব ভাব বের করে দিয়ে আল্লাহর কুদরতি পায়ে নিজেকে বিলীন করে দিতে হবে। সদা-সর্বদা আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে দিলকে তরতাজা রেখে আল্লাহর ওলি হয়ে চরমোনাই থেকে বিদায় নেয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।

মাহফিলে আগত মুসল্লিদের অবস্থানের জন্য প্রস্তুতকৃত চরমোনাই ইউনিয়নের প্রায় ৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৬টি মাঠ শনিবার থেকেই মুসল্লিদের আগমনে মুখরিত হতে থাকে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। উপচেপড়া মুসল্লিদের বাঁধভাঙ্গা স্রোত এখনো চলমান।

মাহফিলে আগত মুসল্লিদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এতে ১১ জন সিনিয়র ডাক্তারের সমন্বয়ে আরো ৪০ জন চিকিৎসক চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। ৪টি অ্যাম্বুল্যান্স ও ১ রিভার অ্যাম্বুলেন্স মাহফিল হাসপাতালে কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। যেকোনো চিকিৎসা সেবায় বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে।

ছয়টি মাঠে মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রায় দশ হাজার স্বেচ্ছাসেবক সহায়তা করবে। এছাড়া নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। আগত মুসল্লিদের খাবারের জন্য প্রত্যেকটি মাঠের চারিদিকে সুপেয় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলে দ্বিতীয় দিন সারাদেশ থেকে আগত ওলামায়ে-কিরামদের নিয়ে ওলামা সম্মেলন ও শেষদিন সকালে ছাত্র-জনতাকে নিয়ে ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। এবছর দেশ-বিদেশের বরেণ্য বেশকিছু ওলামায়ে কিরামের মাহফিলে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে বলে আয়েজকদের তরফ থেকে বলা হয়েছে।

ঐতিহাসিক চরমোনাই বার্ষিক মাহফিলে ৭টি মূল বয়ানের মধ্যে আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর ছাহেব চরমোনাই ৫টি এবং নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই ২টি বয়ান করবেন।

এছাড়াও চরমোনাই কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় দরবার সমূহের পীর সাহেবগণ এবং শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কিরামগণ বয়ান পেশ করবেন বলে জানান হয়েছে।

আগামী শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় হযরত পীর ছাহেব চরমোনাই এবারের মাহফিলের শেষ বয়ানের পরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী এ মাহফিলের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে।