প্রিয় হোসাইন মোহাম্মদ ইউনুস সিরাজী স্যার, স্যার, আসসালামুয়ালাইকুম । আশা করি স্যার আপনি অনেক ভালো আছেন। আমি জানি, আমি কেমন আছি সেটা আপনি ভালো করে জানেন। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে সূর্যের আলোর ন্যায় আপনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে প্রবেশ করেছিলেন।
আপনি আসার ঠিক আগ মূহূর্তে আমরা হারিয়েছিলাম গোলাম মোস্তফা হাসান স্যারকে। গোলাম হাসান স্যার যেমন ববির আইন বিভাগের Assissant professor পদ ছেড়ে জয়েন করেছিলেন Lecturer পদে তেমনি আপনি একই পথ অনুসরন করলেন স্যার। স্যার বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, এই চিটিটা পুরাটাই আমার চোখের জলে লিখা। যতক্ষন লিখেছি ততক্ষণ চোখের পানি টপ টপ করে ফ্লোরে পড়ছে।
স্যার আপনি মনে করে দেখুন তো একটু Contract Law এর ক্লাসে শেষে আমি একদিন বলেছিলাম আপনার রুমে গিয়ে, স্যার, সবাই তো ঢাবির আইন বিভাগ থেকে এখানে এসে কয়েকদিন পর অবার অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়, স্যার প্লিজ আপনি যাবেন না স্যার। তখন আপনি বলেছিলাম, না আজার, আমি যাবো না, আমি তোমাদের মাঝেই থাকবো। কিন্তু স্যার কথাটা কি রাখতে পারলেন না স্যার আমার।
স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় বর্ষ পর্যন্ত আপনার একটা ক্লাসও মিস করি নাই। স্যার বেয়াদবি মাপ করবেন আপনার ক্লাস আমি রের্কড করতাম। কারন ছিলো আপনার ক্লাস ছিলো অনেক imformative। স্যার আপনার দেয়া Motiveational speech এর রেকডিং টাই আমার সম্ভল এখন। স্যার বিশ্বাস করেন ববির আইন বিভাগের প্রতেকটি ছেলের মনের মাঝখানে আপনার নামটি ছিলো। যেদিন শুনেছি আপনি চবির আইন বিভাগে চলে গেছেন সেদিন সকালে আপনার সাথে ফোনে কথা হলো,তখনকার আমার অবস্থা আপনি হয়তো অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। এর পর থেকে আমি খুবই হতাশ।
আপনাকে নিয়ে আমার অনেক বড় আশা ছিলো। ববির আইন বিভাগের ছেলে মেয়েরা জীবনে কিছু করতে হলে আপনার মত একজন সিরাজী স্যারের খুব দরকার। আপনি Interpretation of statutes, Code of civil procedure পড়িয়েছিলেন, এমন কিছু শিখিয়ে গেছেন তা সারাজীবন মনে থাকবে। একটা জুডিশিয়ারীর কোচিং এ আমি যাই, সেখানে Senior Judicial Magistrate স্যার সবার উদ্দেশ্যে একটা প্রশ্ন করে, সৌভাগ্যবশত প্রশ্নটার উওর আমি ছাড়া কেউ দিতে পারে নি। তখন স্যার আমাকে বললেন, তুমি এটা জানো কেমনে, ছাত্র অবস্থায় এতো গভীরে পড়লা কেমনে, তখন বলেছিলাম, স্যার, আমাদের CPC এর স্যার কিছু বাদ দেয় নি সব আইনের ব্যাখাসহ পড়ান।
[caption id="attachment_39801" align="alignleft" width="225"] বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আজহারুল ইসলাম[/caption]
এটা আপনার কষ্টের ফসল স্যার। আর হয়তো আপনার ক্লাস পাবো না, এতো Imformative ক্লাস হয়তো পাবো না বাট আপনি ববির আইনের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর মনের ভিতরে থাকবেন । আপনি আমাকে একদিন ফোনে কথা বলার এক পর্যায়ে বলেছিলেন, ---- আমি যখন থাকবো না, তখন বুঝবা। আসলেই স্যার এখন আমরা বুঝতেছি ও হারে হারে টের পাচ্ছি।স্যার আপনার ক্লাসে আমরা কখনই বোরিং ফিল করি নাই কারন ক্লাসটা হতো বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষা। CPC এতো বড় কোর্স, তা বুঝতে দেন নি আপনি। স্যার যেদিন থেকে শুনেছি আপনি চলে গেছেন সেদিন থেকে সবাই আপনার সাথে সেলফি তুললেও আমিই মনে হয় সবচেয়ে দূরত্ব বজায় রেখেছি কারন আমি মেনে নিতে পারছিলাম না আপনার চলে যাওয়াটা।
আপনার কথা মনে হলেই কান্না আসে।আমার ৩য় সেমিষ্টারের রেজাল্ট যখন ৩.৬৫ আসে এবং ২য় স্থান দখল করার পরও আমি একটু হতাশ ছিলাম তখন আপনিই আমাকে ভরশা দিয়েছিলেন। এখন হয়তো এই কথা গুলো আর শুনা হবে না। যাই হোক, যতই লিখছি ততই চোখের জল বেশি বেশি বের হচ্ছে। আমি আর পারছি না স্যার। অবশেষে এতটুকু বলতে চাই, যে রত্ন ববির আইন বিভাগ থেকে চবির আইন বিভাগে গেলো, চবি যেনো তাহার মূল্য সঠিকভাবে বুঝে সঠিক ব্যবহার করতে পারে ।
স্যার, অনেক কথা লিখে ফেললাম মাফ করবেন আমাকে। আমি ভবিষৎবানী করলাম, আপনি একদিন বাংলাদেশের আইনের টপ শিক্ষকদের একজন হবেন ইনশআল্লাহ। আমার জন্যও দোয়া করবেন। আমার শিক্ষকের দোয়া আমার খুব প্রয়োজন।।
ইতি আপনার একজন প্রিয় ছাত্র,
আজহারুল ইসলাম, আইন বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com