অস্ট্রেলিয়ায় নতুন অভিবাসীদের দেশটির বড় দুই শহরে বসবাসের সুযোগ ভবিষ্যতে হয়তো আর থাকছে না। কারণ, এমন অভিবাসন নীতিই গ্রহণ করতে যাচ্ছে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সরকার। নতুন এই অভিবাসন নীতি চালু হলে সিডনি বা মেলবোর্নের মতো প্রধান শহরে অভিবাসীদের বাস করতে দেওয়া হবে না। তাদের অনেকটা বাধ্য করা হবে দেশটির আঞ্চলিক এলাকায় বসবাস করতে। নতুন নীতিমালা এমনভাবে সাজানো হচ্ছে যাতে অভিবাসীরা আঞ্চলিক শহরে বাস করে। অভিবাসন আইনজীবীরা বলছেন, সরকার অনেক ভিসার নিয়ম পাল্টে আঞ্চলিক শহরে অন্তত পাঁচ বছর বসবাস করার আবশ্যিক শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। কাজে দক্ষ এবং পরিবার ও শরণার্থী ভিসার ক্ষেত্রে এ শর্ত জোরদার করার পরিকল্পনা করছে অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার।
গত অর্থবছরে কাজে দক্ষ (স্কিলড মাইগ্রেশন) ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করা অভিবাসীদের প্রায় ৮৭ শতাংশই সিডনি ও মেলবোর্নে স্থায়ী বসবাস শুরু করে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০০৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় আসা অভিবাসীদের প্রায় ২৭.৬ শতাংশ সিডনিতে এবং ২৬.৩ শতাংশ মেলবোর্নে বসবাস শুরু করে। একই সময়ে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের আঞ্চলিক এলাকায় ৩.২ শতাংশ ও ভিক্টোরিয়া রাজ্যের আঞ্চলিক এলাকায় ১.৯ শতাংশ বসবাস শুরু করে। তাই দেশটির এই প্রধান দুই শহরের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এই পরিকল্পনা করছে সরকার।
সরকারের নতুন নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে শর্ত সাপেক্ষ ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় আসা অভিবাসীদের আঞ্চলিক শহরে বসবাস করতে হবে। এক প্রতিবেদনে অভিবাসন বিভাগ জানায়, অন্তত পাঁচ বছরের জন্য একই জায়গায় বাস করার ফলে স্থানীয়দের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে অভিবাসীরা। এ ছাড়া কর্মস্থলের কারণেও তারা আঞ্চলিক এলাকায় স্থায়ীভাবে বাস করতে চাইবে। এ ছাড়া সন্তানের শিক্ষার জন্যও আঞ্চলিক এলাকায় স্থায়ী বসবাস করতে পারে অভিবাসীরা। এমন পরিকল্পনা করেই অভিবাসন নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে চাইছে মরিসনের সরকার। পাশাপাশি আঞ্চলিক এলাকাগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়নেও মনোযোগ দেবে সরকার।
অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের চাপ কমাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট এবং সাবেক অভিবাসন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার ডাটন অভিবাসী কমাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে সাবেক নাগরিকত্ব মন্ত্রী অ্যালান টডজ গোটা দেশে অভিবাসীদের ভাগ ভাগ করে দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বেশির ভাগ আঞ্চলিক শহরেই অভিবাসীদের বসবাস কম। নতুন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের নেতৃত্ব সরকার তাই আঞ্চলিক এলাকায় অভিবাসী বণ্টন নীতিমালার পরিকল্পনা করছে। অভিবাসন বিভাগ বলছে, এতে দেশের প্রধান শহরে জনসংখ্যার চাপ কমার পাশাপাশি আঞ্চলিক শহরেও দক্ষ কর্মীর চাহিদা পূরণ হবে।
 
 
 
                                            
                                                                                            
                                        
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                         
                         
                        