অস্কারে থাপ্পড়-কাণ্ডের পর আলোচনায় অ্যালোপেশিয়া, কেন হয় এই রোগ

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

অ্যালোপেশিয়া অ্যারেটা কমন একটি রোগ। অনেকেই এ রোগে ভোগেন। কিন্তু ৯৪তম অস্কার মঞ্চে থাপ্পড়-কাণ্ডে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে এই রোগ।

গত ২৮ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটার হলে বসেছিল ৯৪তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড বা অস্কার আসর। এবারের আসরে সেরা অভিনেতা হিসেবে অস্কার জিতে নেন হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা উইল স্মিথ। অনুষ্ঠানে উইল স্মিথের স্ত্রী জেডা পিনকেট স্মিথ হাজির হয়েছিলেন ন্যাড়া মাথায়।

অনুষ্ঠান চলাকালে সঞ্চালক ও জনপ্রিয় কমেডিয়ান ক্রিস রক ঠাট্টা করেন উইল স্মিথের স্ত্রীর ন্যাড়া মাথা নিয়ে। কিন্তু বিষয়টিকে ঠাট্টার ছলে নেননি দর্শকসারিতে বসে থাকা উইল স্মিথ। মঞ্চে গিয়ে ক্রিস রকের গালে কষে এক থাপ্পড় মারেন এই অভিনেতা। এ ঘটনায় পরে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চান স্মিথ।

 

উইল স্মিথের স্ত্রী জেডা অ্যালোপেশিয়া অ্যারেটা রোগে আক্রান্ত। এ রোগের কারণেই ন্যাড়া মাথায় অস্কার অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন তিনি। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, অ্যালোপেশিয়া অ্যারেটা হলো একটি অটোইমিউন অবস্থা। এই অবস্থায় মানুষের চুল পড়ে যায়। এক্ষেত্রে অটোইমিউন বিষয়টাকে ভালোমতো বুঝে নিতে হবে। আমাদের শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু সেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন নিজেরই ক্ষতি করতে শুরু করে তখন বলা হয় অটোইমিউন ডিজিজ।

কোনো এক অজ্ঞাত কারণে শরীরের নিজস্ব ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মাথার হেয়ার ফলিকলদের শত্রু মনে করে। আর এই কারণে সেগুলোকে ধ্বংস করে। ফলে চুল তো ঝরে পড়েই, নতুন করে চুল গজাতেও পারে না। অ্যালোপেশিয়া অ্যারেটা রোগে মূলত মাথার কোনো নির্দিষ্ট অংশের চুল উঠে যায়। তবে অনেকের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয় আরও বেশি। তখন মাথার বিভিন্ন অংশে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গার চুলও উঠতে থাকে।

এ রোগ যে কারো হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়স ৩০-এর গণ্ডি পেরনোর আগেই এই সমস্যা দেখা দেয়। এবং সমস্যা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। অর্থাৎ আজ প্রথম সমস্যা দেখা দিলে কিছুদিনের মধ্যে সমস্যা অনেকটা বেড়ে যেতে পারে।

এ রোগ কেন হয় তার নির্দিষ্ট কারণ এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। শারীরিক অসুস্থতা, ঘুম কম, অস্বাস্থ্যকর খাবার, পানি কম খাওয়া কিংবা অতিরিক্ত মানসিক চাপে এই রোগ হয় বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া বংশগত কারণে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। তবে এটি ছোঁয়াচে কোনো রোগ নয়।

 

এই রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। কিছু ক্ষেত্রে কর্টিওস্টেরয়েড বা অ্যান্টিইনফ্লামেটিরি ওষুধ ব্যবহার করে জটিলতা এড়ানোর চেষ্টা করা হয়।

তথ্যসূত্র: মেডিকেল নিউজ