সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ডিং পারফর্ম্যান্স আর মুজিব উর রহমানের ঘূর্ণিতে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১৪ রানে জয় পেয়েছে ফরচুন বরিশাল। চট্টগ্রাম পর্বে সাকিবের দল তিন ম্যাচে খেলে তিনটিতেই জিতেছে। অন্যদিকে নিজেদের মাঠে চারটি ম্যাচ খেলে তিনটিতেই হেরেছে চট্টগ্রাম।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেয় বরিশাল। ১৯.১ ওভারে দলটি অলআউট হয়েছে ১৪৯ রান করে। দেড়শ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৯.৪ ওভারে ১৩৫ রানে অলআউট হয়।
৬ ম্যাচে চার জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে বরিশাল। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ৪ হারে চট্টগ্রামের অবস্থান চতুর্থ স্থানে।
ব্যাট হাতে ফিফটির পাশাপাপাশি বল হাতে ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন সাকিব আল হাসান। আর মুজিব ছিলেন সবচেয়ে কৃপণ, ৪ ওভারে ৯ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেটে। মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় অস্বস্তিতে থাকা চট্টগ্রাম সাকিব-মুজিবের ঘূর্ণিতে যেন আরও বেসামাল হয়ে ওঠে।
বিপিএলে চট্টগ্রামের দুই রান মেশিন উইল জ্যাকস (০)-বিনি হাওয়েলকে (১) ফিরিয়ে মুজিব আসল কাজটাই সেরেছেন। শুরুতে জ্যাকস ফেরার পর আফিফ হোসেন ও শামীম হোসেন প্রতিরোধ গড়েছিলেন। দুজনে ৬০ বলে ৭০ রান যোগ করে। আফিফকে আউট করে সাকিব ভেঙে দেন জুটি। ৩২ বলে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন আফিফ।
এরপর শামিমও টিকতে পারেননি। ৩০ বলে ২৯ রান করে ফেরেন রানার শিকার হয়ে। নাঈম ইসলাম ফেরেন ০ করে। হাওয়েলকে থামিয়ে দিয়েছেন মুজিব। আকবর আলীও মুজিবের ঘূর্ণি বুঝতে পারেননি। শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজ ১৩ বলে ২৬ রান করে হারের ব্যবধানটাই কমিয়েছেন। মৃতুঞ্জয় চৌধুরী ৯ বলে ৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
সাকিবের পাশাপাশি মুজিবও নিয়েছেন ৩ উইকেট। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন ডোয়াইন ব্রাভো ও মেহেদি হাসান রানা।
এর আগে সাকিবের ঝড়ো ফিফটিতে চালকের আসনে ছিল বরিশাল। কিন্তু সাকিব ফিরতেই যেন সব এলোমেলো। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর তোপে বরিশাল অলআউট হয় ৫ বল আগেই। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে সাকিবের দল দেড়শ রানের লক্ষ্য দিয়েছে। বল হাতে পারফর্ম্যান্সের পাশাপাশি ব্যাট হাতে সাকিব জ্বলে উঠছেন। খুলনার বিপক্ষে দারুণ এক ইনিংসের পর আজ চট্টগ্রামের বিপক্ষে পেয়েছেন ফিফটি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪৫ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেয়েছেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার।
নাসুম আহমেদকে পরপর তিন বলে হাঁকিয়েছেন ছয়। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে হাঁটু গেড়ে লং অনে হাঁকান ছয়। পরের বলেও ঠিক একই জায়গায়। আর তৃতীয় ছয় হাঁকান নাসুমের মাথার উপর দিয়ে মেরে। মৃত্যুঞ্জয়ের বলে ডিপ মিড উইকেটে ঠেলে দিয়ে ৩০ বলে দেখা পান টি-টোয়েন্টিতে ২০তম ফিফটি। তার ইনিংসে চার-ছয়ের মার ছিল সমান ৩টি করে। একই ওভারে ফেরেন মৃত্যুঞ্জয়ের বলেই। এরপরেই যেন বরিশালের ইনিংসে পতন ঘটে।
বরিশালের ওপেনিংয়ে আজও রদবদল ঘটে। ক্রিস গেইলের সঙ্গী হিসেবে আসেন মুনিম শাহরিয়ার (১)। গেইলের ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ২৫ রান। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত খেলেন ২৯ বলে ২৮ রানের ইনিংস। মাঝে তৌহিদ হৃদয় খেলেছেন ২২ রানের ইনিংস।
১৯তম ওভারে মৃত্যুঞ্জয়ের শিকার হয়ে ফেরেন নুরুল হাসান সোহান (০) ইরফান শুক্কুর (৫) ও মুজিব উর রহমান (১)। মাত্র ২ ওভার বোলিং করে ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন মৃত্যুঞ্জয়। এখানেই পিছিয়ে পড়ে বরিশাল। এ ছাড়া শরিফুল ইসলাম নেন ২ উইকেট।