অর্থাভাবে অনিশ্চয়তায় মিমির মেডিকেলে ভর্তি

লেখক:
প্রকাশ: ৩ দিন আগে

সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামে দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মিমি আক্তার। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা।

 

 

বাবা আফসার উদ্দিন সরকার একজন দিনমজুর। মিমি আক্তারের পরিবারে খেয়ে না খেয়ে দিন চলে। এই অবস্থায় মেডিকেল কলেজে ভর্তির খরচ বহন ও পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া অসম্ভব। তাই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে পরিবারের সবাই।

তিন ভাই বোনের মধ্যে মিমি আক্তার সবার বড়। মিমি স্থানীয় নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও দিঘলিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ছিলেন। আর এবার মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। মেধা তালিকায় ২ হাজার ১১৬তম স্থান পেয়েছেন মিমি আক্তার।

 

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট এক খণ্ড জমিতে তাদের পৌত্রিক বসত বাড়ি। সেখানে দুটি ছোট ছোট টিনের ঘর রয়েছে। রাতে খোলা বারান্দায় থাকেন বাবা ও মা। ঘরে থাকেন দুই বোন।

 

মিমি আক্তার বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হব; কিন্তু সাইন্সে পড়লে অনেক খরচ, অসচ্ছলতার কারণে সাইন্সে পড়তে চাইনি। তারপরও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে স্কুল-কলেজের স্যারদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় পড়েছি। মা বলতেন পড়াশোনাই তোমাদের প্রধান হাতিয়ার। মা-বাবার বড় সন্তান আমি। তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে পড়েছি। এখন মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ও পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেওয়া পরিবারের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই ভর্তি হতে পারব কি না, সেই দুশ্চিন্তায় আছি।”

বাবা আফসার উদ্দিন সরদার বলেন, “মেডিকেলে ভর্তি করতে ২৫ হাজার টাকা লাগবে। ছোট দুটি কাঠের গাছ ছিল তা বিক্রি করে ১২ হাজার টাকা জোগাড় করেছি। ভর্তিতে তো আরো ১৩ হাজার লাগবে। ভর্তি করেও বা কীভাবে খরচ চালাব? তাই ভর্তি করতে পারব কি না, মেয়েকে পড়াতে পারব কি না, তাই ভাবছি।”

নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোল্যা মোশারেফ হোসেন বলেন, “মিমি আক্তার খুব মেধাবী একজন ছাত্রী। স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের সহযোগিতায় তার পড়াশোনা চলেছে। কিন্তু মেডিকেলে তো অনেক খরচ। সব মিলে ওই পরিবারের পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। সুযোগ পেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার মতো মেধাবী মেয়ে মিমি। তার পড়াশোনার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ।”