মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) অবসরে গেলেন আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর (মিলন)। এর আগে গত ৩০ নভেম্বর তাকে অবসর দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল।
এক বছর চার মাসের বেশি সময় ধরে তিনি বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ছিলেন। ওএসডি থাকা অবস্থায়ই অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) গেলেন মাহবুব কবীর।
অবসর উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর মাহবুব কবীর তার ভেরিফাইড ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘আজ শেষ হলো চাকরি জীবন। অবসর হলো শুরু। আমার নাম শুনলেই অসংখ্য মহোদয়ের গায়ে চাকাচাকা লাল এলার্জি উঠে যায়, এটাই আমার চাকরি জীবনের অন্যতম স্বার্থকতা। আশা করি সামনে আরও উঠবে ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘সবাইকে কেনা যায় না, মাথা নত করানো যায় না, সেটা প্রমাণ করতে পেরেছি, এটাই আমার জীবনের পরম শান্তির বিষয়। আলহামদুলিল্লাহ। সকল সম্মানের মালিক একমাত্র আল্লাহপাক।’
মাহবুব কবীর সর্বশেষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। রেল বিভাগের নানা অনিয়ম দূর করতে বেশকিছু নতুন উদ্যোগ নিচ্ছিলেন তিনি। গত বছরের ৬ আগস্ট তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
মাহবুব কবীর এর আগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিছু সময়ের জন্য ছিলেন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও। এসময় তিনি ভেজাল ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে আলোচিত হন।
গত বছরের ২৯ জুলাই মাহবুব কবীরের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে ‘৩ মাসে দুর্নীতি দূর করতে ১০ কর্মকর্তার উইং চান অতিরিক্ত সচিব’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে সরকারের জন্য অস্বস্তিকর বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ায় মাহবুব কবীরকে লঘুদণ্ড ‘তিরস্কার’ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে এই শাস্তি দেয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব থাকার সময় মাহবুব কবীরের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি অনলাইন পত্রিকায় ‘বিনিয়োগ করতে এসে হু হু করে কাঁদতে দেখেছি বিদেশিদের’ শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশিত হয়। এজন্যও গত ১১ আগস্ট মাহবুব কবীরকে ফের লঘুদণ্ড হিসেবে ‘তিরস্কার’ দেওয়া হয়।
সর্বশেষ সংকটে পড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেন হাইকোর্ট। মাহবুব কবীরকে দেওয়া হয় ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব।