অবশেষে ভেঙে ফেলা হলো সেতুতে উঠতে তৈরি সেই সিঁড়ি

:
: ২ years ago

অবশেষে ভেঙে ফেলা হয়েছে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভাড়ানি খালের ওপর নির্মিত সেতুতে ওঠা সিঁড়ি ও পাশের ঢাল।

অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদার। পাশাপাশি সামনের সড়কটিও উঁচু করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেয় এলজিইডি।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে ৮৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থের ব্রিজটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। বহুল প্রতীক্ষিত সেতু পেলেও সুফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। ব্রিজের দুই পাশে সড়ক থাকলেও দক্ষিণ প্রান্তের সঙ্গে সমান্তরাল করা হয়নি।

ফলে পাঁচ ফুট উচ্চতার সড়ক নির্মাণ না করে সেখানে সিঁড়ি করা হয়েছে। সিঁড়ি দিয়ে মানুষ ব্রিজ পার হলেও প্রায় দেড় কিলোমিটার দূর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

আফান খান নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ব্রিজ হয়েছে ঠিকই। মানুষ মালামাল নিয়ে যাতায়াত করতে পারে না। গাড়ি চলে না।

এটাই বড় সমস্যা। ব্রিজের এক পাশ অনেক উঁচু। সেখানে উঠতে হয় সিঁড়ি দিয়ে। তাই ব্রিজ দিয়ে হালকা বা ছোট যানবাহন যাতায়াতের কোনো উপায় নেই। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এলজিইডির বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানান, ব্রিজটির নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। লোকজনের চলাচলের জন্য দক্ষিণ প্রান্তে সিঁড়ি ও পাশ দিয়ে র‌্যাম্পের মতো ঢাল করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অপপ্রচার শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে ঠিকাদার সুধন সরকার জানান, নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সময় জটিলতা তৈরি হয়েছে। ওই খাল দিয়ে কার্গোসহ বিভিন্ন ইঞ্জিন চালিত নৌযান চলাচল করে।

ব্রিজের উচ্চতা কম হলে নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হতো। উচ্চতা ঠিক রাখতে গিয়ে দক্ষিণপ্রান্তে তৈরি হয় এ জটিলতা। দক্ষিণপ্রান্তে ব্রিজ থেকে সংযোগ সড়ক করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই।

ব্রিজের শেষ অংশ (অ্যাপার্ট ওয়াল) থেকে মাত্র চার ফুট জায়গা রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের উচ্চতার সংযোগ সড়ক নামানোর জন্য ১৫-২০ ফুট জায়গা থাকার প্রয়োজন ছিল।

তিনি বলেন, লোকজনের চলাচলের সুবিধার্থে যে সিঁড়ি করা হয়েছিল সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে গত দুদিনে সিঁড়ি ও ঢাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানে সংযোগ সড়ক নিমার্ণসহ সামনের সড়ক উঁচু করা হবে। সমতল থেকে ব্রিজের উচ্চতার যে জটিলতা তৈরি হয়েছে সেটি সমাধান হবে।

এলজিইডি বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের আগে সেখানে আমি তিনবার পরিদর্শন করেছি।

ব্রিজের ওপরে শুধু গাড়িই চলাচল করবে না, নিচ দিয়ে নৌকাও চলবে। ব্রিজটির উচ্চতা সঠিকভাবে পরিমাপের জন্য উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এর মধ্যে একটি প্রশিক্ষণে যোগ দিতে আমাকে দেশের বাইরে যেতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর দেখি ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্তের সঙ্গে সড়কে সংযোগ দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, নির্দেশনা মোতাবেক ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে জটিলতা এড়ানো যেত। তদারকিতে উপজেলা প্রকৌশলীর গাফিলতি ছিল।

তাই উপজেলা প্রকৌশলীকে শোকজ করা হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।