দীর্ঘ তাপ প্রবাহের পরে বরিশালে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলল শণিবার বিকেল ৪টার দিকে। তবে তা খুব একটা স্থায়ী না হলেও জনমনে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসে। শনিবার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে ঈদ উল ফিতরের নামাজ বাদে বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের রহমত কামনা করা হয়। গত ১ এপ্রিল বরিশালে ১.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ২১ দিন পরে শনিবার বিকলে বৃষ্টির দেখা মিলল বরিশাল সহ সন্নিহিত এলাকায়। শুক্রবার পটুয়াখালীর কোন কোন এলাকায় ১ মিলি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে লঘুচাপের বর্ধিতাংশ দক্ষিণাঞ্চল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানের কথা জানিয়ে বরিশাল সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টি ও বজ্র বৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। পশাপাশি রোবববার সকালের পরবর্তি ৪৮ ঘন্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তনের কথা বলেছে আবহাওয়া অফিস। শণিবার এ হালকা বৃষ্টিপাত বিকেল ৪টা থেকে ৪.২০টা পর্যন্ত স্থায়ী হলেও দুপুর ৩টায় ৩৫.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রায় ২৯ ডিগ্রীতে হ্রাস পায়। ফলে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তিও নেমে আসে।
গত ১ এপ্রিল বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে ৪৮ ঘন্টা পরেই ৩২.৩ ডিগ্রীতে উঠে যায়। ৩ এপ্রিল দুপুর থেকেই আবহাওয়া চৈত্রের আদলে ফিরতে শুরু করে। ঐ দিন তাপমাত্রার পারদ ৩৪.৩ ডিগ্রীতে স্থির হয়। যা ছিল স্বাভবাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। গত ১৩ এপ্রিল দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌছে। ১৪ এপ্রিল দুপরে তাপমাত্রার বাড়াবাড়ি বরিশালের সম্প্রতিক ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যয়ে ৩৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছুয়ে যায়। যা ছিল আবহাওয়া বিভাগের এ সময়েরে স্বাভাবিক তাপমাত্রার ৬.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। পটুয়অখারী ও খেপুপাড়াতে তা ছিল ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছেই।
এরপর থেকে গত ৮টি দিনই বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৩-৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ওপরেই ছিল। সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ এ তাপ প্রবাহে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দূর্ভোগের শেষ ছিলনা। যদিও গত ৩টি দিন পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টাতে শুরু করে। তবে আবহাওয়ার তারতম্যে সাধারন মানুষের দূর্ভোগ পিছু ছাড়েনি।
গত ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’এ ভর করে প্রবল বর্ষণে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল সয়লাব হবার পরে টানা সাড়ে ৪ মাস এ অঞ্চলে কোন বৃষ্টি হয়নি। চলতি বছরে বৃষ্টিবিহীন জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারীর পরে গত মার্চে স্বাভাবিকের ৪১ % বেশী বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। আবহাওয়া বিভাগের মতে, গত মাসে সারা দেশে স্বাভবাবিকের চেয়ে ৭৭.৬% বেশী বৃষ্টি হলেও বরিশালে স্বাভাবিক ৫৩ মিলিমিটারের স্থলে ৭৫ মিলি বৃষ্টি হয়েছিল।
এমনকি বিদায়ী শীত মৌসুমে তাপমাত্রার পারদ স্বাভবিকের ৩ ডিগ্রী নিচে নামার পরে গ্রীষ্মের আগেই লাগামহীনভাবে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখি হবার ফলে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের কষ্ট আর দূর্ভোগ ক্রমশ বাড়ছিল। এমনকি গত কয়েকদিন জরুরী প্রয়োজন ছাড়া দুপুর থেকে বেশীর ভাগ মানুষই ঘরের বাইরে বের হয়নি। ফলে ঈদ বাজারের খড়া আরো আরো নাজুক আকার ধারন করে।ব্যাবসায়ীদের মনে হতাশার মাত্রাও বৃুদ্ধি পায়ঢঅ। এমনকি এবার নজিরবিহীন তাপ প্রবাহের মধ্যে ভোলা ও পটুয়াখালী বাদে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে বিদ্যুৎ ঘাটতি জন জীবনে নতুন দূর্ভোগের মাত্রা যোগ করে।