#Saudi police officers hand out roses to female drivers on landmark day. #HerDayHerWay #AllAboutHer #المراه_السعوديه_تسوق
প্রতিক্ষার অবসান হলো। সৌদি আরবের রাজপথে গাড়ি চালাচ্ছেন দেশটির নারীরা- এমন স্বপ্নের বাস্তব রূপ পেলো ঘড়ির কাঁটায় শনিবার মধ্যরাত থেকেই। এদিন রাতে দেশটির রাজধানী রিয়াদের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় নারীদের গাড়ি চালাতে দেখা গেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা দেশটির ইতিহাসে নাম লেখালেন।
দেশটির রাজধানী রিয়াদসহ প্রধান প্রধান শহরে শনিবার মধ্যরাতে রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নেমে পড়েন নারীরা। বিভিন্ন শহরে ড্রাইভিং সিটে বসে দিনটি উদযাপন করেছেন তারা।
রিয়াদে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া প্রথম গ্রুপের নারীদের মধ্যে সালমা রাশিদ আলসানিয়াদ অন্যতম। শনিবার মধ্যরাতের পর তিনি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। সালমা বলেন, এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এই দিনটি অবশেষে এলো! এজন্য আমি খুবই উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ অনুভব করছি। আসলেই একটি স্বপ্ন সত্যি হলো। আমি আমার দেশের রাস্তায় গাড়ি চালাতে পেরে আনন্দিত।
অনেক নারীই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। পোস্ট করেছেন জীবনের প্রথমবার গাড়ি চালনার ছবি।
নিজ শহরে প্রথম গাড়ির চালানোর অনুভূতি প্রকাশে টেলিভিশন উপস্থাপক ও লেখক সামের আল মাজরান লিখেছেন, আমি সবসময়ই জানতাম যে এ দিনটি আসবে। কিন্তু এটি খুব তাড়াতাড়ি এসেছে। নিজেকে পাখির মতো মনে হচ্ছে।
এদিন সৌদি প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন তালালের মেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করেছেন। টুইটারে এ ভিডিও আপলোড করে তিনি লিখেছেন, এটা অনেক বড় একটা অর্জন। এখন থেকে সৌদি নারীরা স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে।
বিশ্বে একমাত্র সৌদি আরবেই এতদিন নারীর জন্য গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ছিল। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর কট্টর রক্ষণশীলতার পরিবর্তে সামাজিক-অর্থনৈতিক সংস্কারের ঘোষণা দেন। তার ভিশন-২০৩০ এর আওতায় সৌদি নারীর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এর মধ্যে এক ডিক্রি জারি করা হয় রাজপথে নারীর গাড়ি চালানোর অনুমতি দিয়ে। এরপর চলতি মাসেই সৌদি কর্তৃপক্ষ দেশটির কয়েক হাজার নারীকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়। রিয়াদ ও জেদ্দায় চালু করা হয় নারীর ড্রাইভিং শিক্ষার অনেক প্রতিষ্ঠান।
সৌদির নারী অধিকার কর্মী হানা আল খামরি বলেন, নারীর মুক্ত বিচরণের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ, যা নারী স্বাধীনতার জন্য অপরিহার্য ছিল।
হানা আল খামরি সৌদি আরবে নারীর সাংবাদিকতা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। দ্রুতই সেটি প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে সৌদি নারীদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অবাধ চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত হলো।
সৌদি আরবের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আরাবিয়া ফাউন্ডেশনের সিনিয়র বিশ্নেষক নাজহ আল ওতাইবি বলেন, সৌদি নারীদের জন্য এটি পরিত্রাণের মতো। তাদের পুরুষের ওপর নির্ভরশীল করে রাখা হয়েছিল। নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ করে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন অসম্ভব করে তোলা হয়েছিল। এর মাধ্যমে তা থেকে সৌদি নারীরা মুক্তি পেলো।
কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটার হাউস কুপার্স বলছে, ২০২০ সালের মধ্যে ৩০ লাখ নারী ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন এবং গাড়ি চালাতে পারবেন। এ সিদ্ধান্তের কারণে নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে। এতে করে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতীয় অর্থনীতিতে ৯০ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে। সূত্র: খালিজ টাইমস ও বিবিসি।