টেস্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে খ্যাত মুমিনুল হককে কেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দলে রাখা হলো না, এ নিয়ে নানা গুঞ্জন। তুমুল সমালোচনার ঝড়। শনিবার নির্বাচকরা দল ঘোষণার পর থেকেই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়।
অবশেষে আজ দুপুরে বিসিবিতে হঠাৎ প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনের আগমন এবং তার আগমনের পরই গুঞ্জন শুরু হয়- হয়তো বা মুমিনুলকে ফেরাতেই তিনি মিরপুরে এলেন। গুঞ্জন আরও বাড়তে থাকে, যখন বিসিবি প্রেসিডেন্ট বৈঠকে বসেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এবং প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে।
বৈঠক শেষেই বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিসিবি বিগ বস ঘোষণা দিলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দলে থাকছেন মুমিনুল। তবে তাকে অতিরিক্ত হিসেবে নয়, দলে নেয়া হয়েছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের পরিবর্তে।
মুমিনুলকে দলে ফেরাতে গিয়ে কপাল পুড়লো মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। চট্টগ্রামে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করতে যাওয়ার আগেই চোখে ময়লা পড়ে সৈকতের। ইনফেকশন দেখা দেয়ার কারণে চট্টগ্রাম যেতে পারেননি তিনি। যদিও ওই সময় ডাক্তার তাকে পাঁচদিনের বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
তবে দল ঢাকায় ফেরার পর ঠিকই অনুশীলন করে গিয়েছিলেন সৈকত। তাকে রেখেই ১৪ জনের দল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচক। পাশে ছিলেন অপর নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন এবং প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তখন মুমিনুলকে বাদ দেয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, তার অফ ফর্মের কথা।
এরপরই মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে। তুমুল সমালোচনা শুরু হয় চারদিকে। ঘরের মাঠে সর্বশেষ ইংল্যান্ডকে যে টেস্টে হারিয়েছিল বাংলাদেশ, সেখানেও দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন মুমিনুল। হোম সিরিজে বরাবরই ভালো ব্যাটিং করেন তিনি। বাংলাদেশের টেস্ট ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তারই গড় সবচেয়ে বেশি। মাত্র ২২ টেস্টে ক্যারিয়ারে রয়েছে ৪টি সেঞ্চুরি এবং ১১টি হাফ সেঞ্চুরি।
চারদিকে যখন এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছিল, এমন সময়ই (আজ দুপুরে) বিসিবিতে আসেন নাজমুল হাসান পাপন। প্রধান কোচ হাথুরুসিংহে, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির সভাপতি এবং বিসিবি পরিচালক আকরাম খান ও জাতীয় দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন।
বৈঠক শেষ করে বের হয়ে যাওয়ার মুহূর্তে বিসিবির সাংবাদিক লাউঞ্জে দাঁড়িয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন পাপন। সেখানেই তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের এখন কী অবস্থা? তার চোখের একটা ইনফেকশনের কথা শোনা গিয়েছিল। সে কি খেলতে পারবে? এ প্রশ্নের জবাবেই পাপন জানালেন, ‘সৈকত তো থাকবে না। তার চোখে ইনফেকশন এবং তার সেরে ওঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তার ব্যাপারে আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। এ কারণে মুমিনুলকে ১৪ জনের দলে নিয়েছি।’
অথচ তার খানিক আগেও এক প্রশ্নের জবাবে বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, ‘আমি পরিস্কার বলতে পারি মুমিনুলের না থাকাটা খুবই দুঃখজনক। নিঃসন্দেহে সে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান। আমরা এক-দুই বছর ধরে তাকে টেস্ট স্পেশালিস্ট হিসেবেই বিবেচনায় রেখেছি। ভবিষ্যতেও তাই থাকবে। হয়তো বা একটি সিরিজ কিংবা একটি মাত্র টেস্টেরন জন্য বিবেচনার বাইরে মুমিনুল। আমরা তাকে যথাযথভাবে লালন করবো এবং তার পরিচর্যাও থাকবে।’
এর খানিক পরই আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলে দিলেন মোসাদ্দেকের পরিবর্তে দলে নেয়া হয়েছে মুমিনুলকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘চোখের কর্নিয়ায় সমস্যার কারণে আরও ১৫ দিন সূর্যের আলোতে আসতে পারবে না মোসাদ্দেক। তাই তার পরিবর্তে দলে নেয়া হয়েছে মমিনুলকে।’