অনুমোদন পেল আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

:
: ৬ years ago

রাজধানীতে আরো একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস। রাজধানীর গুলশান এভিনিউয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হবে। নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হলেন ড. এম জুবায়দুর রহমান। এ নিয়ে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৬-এ।

ঢাকায় আর কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন না দেয়ার ব্যাপারে সরকারের একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু পরপর দুটি বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানীতে অনুমোদন দেয়া হলো। সর্বশেষ ২০১৫ সালের আগস্টে রাজধানীর উত্তরায় স্থাপনের জন্য আনোয়ার খান মডার্ন বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেয়া হয়। এরও কয়েক মাস আগে একসঙ্গে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেয়েছিল। শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের ‘রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়’। এটি রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জে স্থাপনের অনুমোদন পেয়েছে। বরিশালে দেয়া হয়েছিল ‘ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ’। এর উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছেন বরিশালের বেসরকারি ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ইমরান চৌধুরী। অন্যটি অনুমোদন পায় নারায়ণগঞ্জে। সেটির নাম ‘রূপায়ণ একেএম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয়।’ এটির উদ্যোক্তা হিসেবে লিয়াকত আলী খান মুকুলের নাম রয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৫৫টি রাজধানীতে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে আছে নয়টি, সিলেটে চারটি, রাজশাহীতে দুটি ও খুলনায় আছে দুটি। অন্য ২১টি রয়েছে ১৪টি জেলায়। এদের বেশিরভাগের উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অভিযোগ আছে, একশ্রেণির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধে চলছে সার্টিফিকেট বাণিজ্য। নিয়মবহির্ভূতভাবে তারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক শাখা-প্রশাখা খুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। টাকার বিনিময়ে দিচ্ছে উচ্চতর ডিগ্রি আর সার্টিফিকেট। কয়েকটিতে বোর্ড অব ট্রাস্টিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সুস্পষ্ট বেতন কাঠামো নেই। অনেকের মানসম্মত ল্যাবরেটরি ও গবেষণাগার নেই। কিছুদিন আগেও দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় ও এর সব শাখা ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ইতোপূর্বে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়কে অনিয়মের কারণে সরকার বন্ধ ঘোষণা করলেও আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে চলছে। কতগুলোর মালিকানা নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। সম্প্রতি এ রকম মামলা-মোকদ্দমা, মালিকানায় দ্বন্দ্বসহ নানা সমস্যায় থাকা বেসরকারি ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসি বলছে, কেউ অননুমোদিত কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত ক্যাম্পাসে প্রোগ্রাম বা কোর্সে ভর্তি হলে তার দায়-দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসি নেবে না।

নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের ক্ষেত্রে ১৯টি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে ২৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব বা ভাড়া করা ভবন, কমপক্ষে তিনটি অনুষদ ও ছয়টি বিভাগ, পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি, ছাত্রছাত্রীদের জন্য কমনরুম, সেমিনার কক্ষসহ পর্যাপ্ত অবকাঠামো থাকতে হবে। পূর্বানুমোদন ছাড়া বিভাগ খোলা যাবে না। বিভাগে শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্টসংখ্যক পূর্ণকালীন শিক্ষক থাকতে হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদন ছাড়া মেডিকেল, ডেন্টাল বা চিকিৎসাসংক্রান্ত কোনো কোর্স পরিচালনা করা যাবে না। চ্যান্সেলরের (রাষ্ট্রপতি) পূর্ব অনুমোদন ছাড়া বিদেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা যাবে না। আরোপিত শর্তগুলোর ওপর ৩শ’ টাকার নন- জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা দিতে হবে।