ঢাকা: ০৬ আগষ্ট ২০২২, শনিবার: দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা দেশের সাধারণ মানুষের চরম এক দুঃসময়ে জ্বালানী তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আজ ০৬ আগষ্ট শনিবার বিকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে এই দাবী জানায় সংগঠনটি।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার গত নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছিলেন। তখন দাম নির্ধারণ করা হয় ৮০ টাকা লিটার। ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর বাস ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ, লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হয় ৩৫ শতাংশ যা তেলের দাম বাড়ানো হারের চেয়ে অনেক বেশি।
প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দ্রব্যমূল্য উধ্বগতিতে দিশেহারা দেশের সাধারণ মানুষের চরম এক দুঃসময়ে জ্বালানি তেলের দাম একলাফে প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছির বাড়ানো ফলে জনজীবনে চরম দূর্ভোগ নেমে এসেছে। পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য সাধারণ মানুষের সামর্থ্যরে বাইরে চলে যাবে।
ইত্যিমধ্যে পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হবে, ফলে আমদানির উপর নির্ভরশীলতা বাড়বে। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক ছোট ছোট শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে একদিকে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে জাতীয় অর্থনীতি উপর চাপ আরো বাড়বে। অন্যদিকে বেকারত্ব সমস্যা আরো প্রকট হবে। আমাদের দেশে সাধারণত তেলের দাম যে পরিমাণ বাড়ে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বাড়ে বাস ও অন্যান্য গণপরিবহন ভাড়া। পন্য পরিবহন ভাড়াও ইচ্ছেমত বাড়িয়ে দেয় ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিকেরা। বাসের ক্ষেত্রে সরকার বাসের মালিক-শ্রমিক নেতারা মিলেমিশে একচেটিয়াভাবে বাসের ভাড়া যে পরিমাণ বাড়ায় বাসে বাসে তার কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করে। সরকার বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দিলেও সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী বাসে আদায় হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা বা বর্ধিত ভাড়া আদায় বন্ধে তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দাম বাড়ালেও বর্তমানে তেলের বাজার নি¤œমুখী। এই সময়ে বাজার পর্যবেক্ষণ না করে, কেবল আইএমএফের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নে জ্বালানী তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। অনতিবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে, পূর্বের মূল্য বহাল রাখার দাবী জানান তিনি।
এই সময় প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, দেশ বাচাঁও মানুষ বাচাঁও আন্দোলনের সভাপতি আর. কে. রিপন প্রমূখ।