হারানোর ২২ বছর পর মা-বাবার কাছে ফিরলো মেয়ে

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

মাত্র ছয় বছর বয়সে নানির সঙ্গে মামার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যান তানজিমা আক্তার। অনেক চেষ্টায়ও তার খোঁজ পায়নি পরিবার। মাঝে কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। তানজিমাও এখন আর সেই ছোট্ট খুকিটি নেই। হারিয়ে যাওয়ার ২২ বছর পর মা-বাবা ও স্বজনদের কাছে ফিরেছেন ময়মনসিংহের মেয়ে তানজিমা। এতে পরিবারটির মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মগটুলা ইউনিয়নের তরফফাচাইল গ্রামে জন্মভিটায় ফিরেন ওই গ্রামের নূরুল হুদা ও জোসনা বেগম দম্পতির মেয়ে তানজিমা।

জানা যায়, তানজিমার বিয়ে হয়েছে, তিন সন্তান ও স্বামী নিয়ে এখন তার সংসার। থাকেন রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় ভাড়া বাসায়। ঠিক ২২ বছর আগে কোনো একদিন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে নানির সঙ্গে মামার বাড়ি রাজধানী মহাখালীর করাইলে বেড়াতে গিয়ে ঘটনাচক্রে তিনি হারিয়ে যান।

 

মেয়েকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত তানজিমার বাবা নূরুল হুদা বলেন, ১৯৯৯ সালের ৮ মার্চ নানি জাহানারা খাতুনের সঙ্গে ঈশ্বরগঞ্জ থেকে রাজধানীর মহাখালীর কড়াইলে মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যায় তার মেয়ে। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে পাওয়া যায়নি। ২২ বছর পর মেয়েকে ফিরে পাবেন, আশা ছিল না।

তিনি আরও বলেন, গত ৩ অক্টোবর বিকেলে তানজিমার হারিয়ে যাওয়ার গল্প প্রচার হয় আরজে কিবরিয়ার রেডিও স্টেশন ‘আপন ঠিকানায়’। সেখানে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন তানজিমা। ওই গল্প শুনে আপন ঠিকানার আরজে কিবরিয়ার সঙ্গে ৫ অক্টোবর যোগাযোগ করে দেখা করেন তিনি।

নূরুল হুদা আরও জানান, দীর্ঘ ২২ বছর পর ‘আপন ঠিকান’র মাধ্যমে মেয়েকে খুঁজে পেয়ে আমি খুব আনন্দিত। তানজিমাকে পেয়ে তার মা আনন্দে আত্মহারা। আরজে কিবরিয়ার প্রতি আমি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই এবং দোয়া করি সে যেন আরও অনেক মানুষের উপকার করতে পারে। আল্লাহ যেন তাকে ভাল রাখেন।

এ বিষয়ে তানজিমা আক্তার  বলেন, কোনো দিন ভাবতেও পারিনি, বাবা-মাকে আবার ফিরে পাবো। আমার একটাই চাওয়া ছিল জীবনে মা-বাবাকে যেন একবার হলেও দেখতে পারি। আমার সে আশা পূরণ করেছে আপন ঠিকানা। আমি দোয়া করি ‘আপন ঠিকানা’ যেন আরও অনেক মানুষকে আপন ঠিকানায় পৌঁছে দেয়।

 

হারানোর পর কীভাবে এতগুলো বছর কেটেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার গোকরান মিয়া নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে আমি বড় হয়েছি। তিনি নিজের মেয়ের মত আমাকে লালন-পালন করেছেন, বিয়ে দিয়েছেন। তিনি বেঁচে নেই। বেশ ক’বছর আগে মারা গেছেন।

তানজিমার ছোট ভাই শামিম আহমেদ বলেন, বোনকে ফিরে পেয়েছি। আমরা আট ভাই-বোন একসঙ্গে হয়েছি। এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশের নয়