বগুড়ায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে রতন মিয়ার নামের এক ব্যক্তির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে, তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩-এর বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রতন মিয়া সদর উপজেলার মধ্যপালশা গ্রামের মৃত শুক্কর মোহাম্মদের ছেলে। তার স্ত্রীর নাম সাকিলা খাতুন। তিনি পালশা গ্রামের আজাহার আলীর মেয়ে। আসামি রতন অনেকদিন ধরে পলাতক।
২০০২ সালের ২১ জুন খুন হন সাকিলা। পরবর্তী সময়ে সাকিলার ভাই সারোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। ১৯ বছর পর এই মামলার রায় ঘোষণার করা হলো।
মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩-এর অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি বিনয় কুমার দাস বিশু।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে রতন মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার সাকিলা খাতুনের বিয়ে হয়। একপর্যায়ে পারিবারিক কলহের অভিযোগ তুলে রতন ২০০২ সালের শুরুতে সাকিলাকে তালাক দেন। তবে সেই তালাকে সাকিলা রাজি না হওয়ায় ২০০২ সালের ৪ মার্চ আবারও তারা একসঙ্গে দাম্পত্যজীবন শুরু করেন।
ওই বছরের ২০ জুন সাকিলার ভাইয়ের বিয়েতে আবারও তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এতে রাগ করে রতন তার শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন।
পরেরদিন সাকিলাকে কবিরাজ দেখানোর কথা বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসেন রতন। এরপর সাকিলাকে কৌশলে গোদারপাড়া বাজার থেকে নিরিবিলি এক মাঠে নিয়ে গলাটিপে হত্যাচেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে গলায় ও পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যান রতন। পরে স্থানীয়রা সাকিলার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।
ওই ঘটনায় পুলিশ রতনকে গ্রেফতার করলে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরবর্তী সময়ে তাকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ১০ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অতিরিক্ত পিপি বিনয় কুমার দাস জানান, মামলায় দীর্ঘ শুনানির পর মঙ্গলবার রতন মিয়ার ফাঁসির আদেশ দেন বিচারক। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকদিন ধরে আসামি পলাতক।