বরিশাল::: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিছন্ন রাখার অনুকরণীয় নিয়ম চালু
করলেন পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম।
প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার দুই ঘন্টার জন্য হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও
কর্মচারীরা সম্মিলিতভাবে পরিস্কার-পরিছন্নতার কাজে নিয়োজিত থাকবে।
এ উপলক্ষে আজ ২৪ জানুয়ারী মঙ্গলবার পরিছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। দুপুরে
ঝাড়ু হাতে পরিছন্নতাকাজে অংশ নিয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন হাসপাতাল
পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম।
হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, ৫০০ শয্যা নিয়ে ১৯৬৮ সালের প্রতিষ্ঠিত শের-ই-বাংলা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি পর্যায়ক্রমে ১০০০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখানে জনবল এবং
অবকাঠামোগত উন্নয়ন সেই ৫০০ শয্যারই। অথচ এখানে প্রতিদিন আন্তঃবিভাগে গড়ে
২ থেকে আড়াই হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। সেই সাথে বহিঃবিভাগে প্রায় ৩ থেকে ৪
হাজার রোগী সেবা নেন। রোগীর সাথে স্বজনসহ এখানকার চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ
মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষের আনাগোনা এই হাসপাতালে।
ফলে ক্রমশই হাসপাতালের ভিতর এবং বাহিরের পরিবেশ নোংড়া হচ্ছে। আর এই নোংড়া
পরিবেশ দুর করতে পর্যাপ্ত বর্জ্য নিষ্কাশন এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নেই
হাসপাতালে।
এ অবস্থায় ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্ব নেয়ার পর
থেকেই পরিছন্ন পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নানামুখি উদ্যোগ হাতে নেন তিনি।
পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে হাসপাতালের সামনের
দুই মাঠে পার্ক নির্মাণ, দুটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ওয়ার্কওয়ে, পানির
ফোয়ারাসহ সম্বলিত একটি দৃস্টি নন্দন হাসপাতাল পরিবেশ সৃস্টি করার লক্ষ্যে প্রস্তাবনা
প্রেরণ করেন। কিন্তু গনপূর্ত বিভাগ কর্তৃক ওই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয় নি। চলতি অর্থ
বছরেও একই প্রস্তাবনা পূর্ণরায় গনপূত বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করেন ডাঃ
এইচ এম সাইফুল ইসলাম। প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যক বিদ্যমান জনবলের মাধ্যমে
হাসপাতালের ভিতরের সকল ওয়ার্ড ও ইউনিট এবং বাহিরের মাঠ, ড্রেন, রাস্তা
পরিছন্নতার জন্য পৃর্থক টিম গঠন করেছেন। ওই টিম গুলোকে তিনি কঠোর ভাবে
তদারকি করছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিছন্ন রাখার
অনুকরণীয় নিয়ম চালু করলেন তিনি। আজ ২৪ জানুয়ারী মঙ্গলবার ‘আমরাই পরিছন্ন
রাখব আমাদের হাসপাতাল’ এই শ্লোগান নিয়ে পরিছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন
পরিচালক ডা্ধঃসঢ়; এইচ এম সাইফুল ইসলাম। উদ্বোধনের পরই হাসপাতালের চিকিৎসক,
কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা দুই ঘন্টা ব্যাপী মাঠ, রাস্তা, ড্রেন পরিছন্নতার কাজ
করেন। হাসপাতারের ভিতরের সকল ওয়ার্ড ও ইউনিট, বারান্দাসমুহ পরিস্কার করা হয়। এ সময়
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি বরিশালের
একটি ঐতিয্যবাহী প্রতিষ্ঠান। এই পতিষ্ঠানটি পরিছন্ন থাকবে এটাই সকলে আশা
করেন। তাই হাসপাতালের সামনে দুইটি উন্মুক্ত মাঠ যাতে সাবক্ষিণ পরিস্কার-পরিছন্ন ও
ফলের বাগান দৃশ্যমান থাকে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। পরিচালক বলেন, আমি মনেকরি
আমরা যখন আমাদের ঘর নিজেরাই পরিস্কার করি তখনতো আমরা ঘরে পরিছন্নতাকর্মি।
তাহলে আমাদের হাসপাতাল পরিস্কার করতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তাই আমরা সকলে
মিলে সপ্তাহে অন্তত এক দিন দুই ঘন্টার জন্য হাসপাতাল পরিস্কার পরিছন্নতার কাজ করার
উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। এ সম্মিলিত প্রচেস্টায় অচিরেই হাসপাতাল থেকে নোংড়া
পরিবেশ দুর হবে বলে আমার বিশ্বাস।
উল্লেখ্য এই কার্যক্রম চলমান থাকলে হাসপাতালের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার চিত্র পাল্টে যাবে
এবং রোগীরা ভালো পরিবেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন বলে প্রত্যাশা রোগী ও তাদের
স্বজনদের।