শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইনের খসড়া অনুমোদন

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন ২০১৮-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। কেউ যদি শিশুশ্রমিক নিয়োগ করে, তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হবে। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত কিশোররা হালকা কাজ করতে পারবে। আগে ১২ বছরের শিশুরা হালকা কাজের এ সুযোগ পেত।

শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। আজ সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ আইনের খসড়াটির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরে মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ ব্রিফিংয়ে সভার সিদ্ধান্ত জানান। এরপর শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী তাঁর দপ্তরে কয়েকজন সাংবাদিককে আইনের বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা দেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই প্রস্তাবিত আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। আসন্ন সংসদ অধিবেশনে এ আইন পাস হবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, আজ অনেকগুলো ধারা সংশোধন করে এটি শ্রমবান্ধব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে শ্রমিকদের উৎসবভাতার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।

আগে ট্রেড ইউনিয়ন করার জন্য ৩০ শতাংশ শ্রমিকের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। এখন তা কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। আগে ট্রেড ইউনিয়ন করার জন্য আগে ধর্মঘট ডাকার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের মত গ্রহণের বিধান ছিল। এখন সেটা কমিয়ে ৫১ শতাংশ করা হয়েছে। মৃত্যুজনিত কারণে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণও দ্বিগুণ করা হয়েছে। আগে কোনো শ্রমিক মৃত্যুবরণ করলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক লাখ টাকা দেওয়া হতো। এখন তা দুই লাখ টাকা করা হয়েছে।

আহত হয়ে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে ক্ষতিপূরণের টাকাও দ্বিগুণ করা হয়েছে। আগে এই ক্ষতিপূরণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার টাকা। এখন সেটা বাড়িয়ে করা হয়েছে আড়াই লাখ টাকা।

শ্রম আদালতে মামলা নিষ্পত্তির জন্য (রায়ের সময়) নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এখন প্রস্তাবিত আইনে ৯০ দিনের মধ্যে রায় দিতে হবে। কোনো কারণে এই ৯০ দিনের মধ্যে রায় দেওয়া না গেলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এই রায় অবশ্যই দিতে হবে।

প্রস্তাবিত আইনে নারী শ্রমিকদের প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রস্তাবিত আইনে অসদাচরণের জন্য মালিক ও শ্রমিকের আগে যে সাজা ছিল তা কমানো হয়েছে। আগে সাজা ছিল দুই বছর এখন করা হয়েছে এক বছর।

বেআইনি ধর্মঘট ডাকলে শ্রমিকদের শাস্তিও কমানো হয়েছে। এখনকার আইনে এর জন্য এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান ছিল। এখন সেটা ছয় মাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বেআইনি ধর্মঘট ডাকার জন্য অর্থদণ্ড এখনকার মতোই পাঁচ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।