চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের (৩২) আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তার স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। আটকের নাম তানজিলা হক চৌধুরী ওরফে মিতু।
পুলিশ জানায়, আকাশের স্ত্রী মিতুকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নগরের নন্দনকানন এলাকার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বামীর অভিযোগের বিষয়ে কিছু স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আবার কিছু বিষয় এড়িয়ে গেছেন। নিহত আকাশের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।
নগর পুলিশে অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) মিজানুর রহমান বলেন, ডা. আকাশ ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শিরায় বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন।
আত্মহত্যার আগে বুধবার দিবাগত রাতে স্ত্রী মিতুর সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর রাত চারটার দিকে মিতু তার বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে আকাশ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ এনে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেন।
ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার সঙ্গে তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর ২০০৯ সাল থেকে পরিচয়।প্রচণ্ড ভালবাসি ওকে। ও নিজেও আমাকে অনেক ভালবাসে। আমরা ঘুরে বেড়াই, প্রেম করে বেড়াই। আমাদের ভালবাসা কম বেশি সবাই জানে। অনেকে বউ পাগলাও ডাকত।…আমিতো বেঁচে থেকেও মৃত হয়ে গেলাম। তারপর ক্ষমা চাইল শবে কদরের রাতে, কান্না করে পা ধরে আর কখনো এমন হবে না। আমিও ক্ষমা করে দিয়ে ১ বছর ভালভাবেই সংসার করলাম। তারপর ও দেশের বাইরে আমেরিকা গেল। মাঝখানে একবার ঈদ পালন করতে আসল, সেপ্টেম্বরে ২০১৮ আবার চলে গেল ইউএসএমএলই এর প্রিপারেশন নিচ্ছিল সাথে ফেব্রুয়ারিতে ২০১৯ এ আমার ইউএসএ যাওয়ার কথা।…আমি বারবার বলছি আমাকে ভাল না লাগলে ছেড়ে দাও কিন্তু চিট কর না মিথ্যা বল না।’
‘আমার ভালবাসা সবসময় ওর জন্য ১০০% ছিল। আমি আর সহ্য করতে পারিনি। আমাদের দেশে তো ভালবাসায় চিটিং এর শাস্তি নেই। তাই আমিই বিচার করলাম আর আমি চির শান্তির পথ বেছে নিলাম। তোমাদেরও বলছি কাউকে আর ভাল না লাগলে সুন্দরভাবে আলাদা হয়ে যাও চিট কর না মিথ্যা বল না। আমি জানি অনেকে বিশ্বাস করবে না এত অমায়িক মেয়ে আমিও এসব দেখে ভালবেসেছিলাম। ভিতর বাহির যদি এক হত। সবাই আমার দোষ দিবে সবকিছুর জন্য তাই ব্যাখ্যা করলাম।…ও মা তুমি মাফ করে দিও তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না। মায়ের ভালবাসার কখনো তুলনা চলে না।…’
চন্দনাইশ উপজেলার বরকল বাংলাবাজার এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে ডা. আকাশের সঙ্গে ২০০৯ সালে পরিচয় হয় তানজিলা চৌধুরী মিতুর। এর পর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৬ সালে তারা বিয়ে করেন। আকাশ চট্টগ্রাম মেডিকেলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ছিলেন।