শামীম আহমেদ ॥ ভিসি’র পদত্যাগ দাবীসহ ৮ দফা দাবীতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক সমিতির আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ২২ তম দিনের মতো শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টা থেকে ক্যাম্পাসে ভিসি’র পদত্যাগ দাবীতে ক্লাশ পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
একই ভাবে ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের নীচ তলায় একই স্থানে ৮ দফা দাবীতে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত তৃতীয় দিনের মতো অবস্থায় ধর্মঘট পালন করেছেন শিক্ষকরা। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভিসি বিরোধী চলমান আন্দোলনের ২২ তম দিন মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের নীচ তলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ভিসি’র পদত্যাগ অথবা স্থায়ীভাবে ছুটিতে যাবার দাবী জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকে।
চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জানান, ‘নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানের কারনে আমরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে না গিয়ে আপাতত ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে সকলে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক ও তাদের আন্দোলনের সাথে একাত্ত্বতা প্রকাশ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, আমরা আমাদের ৮ দফা যৌক্তিক দাবী আদায়ে দুই ঘন্টা করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছি। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছি। দাবী না মানা হলে আরো বড় কর্মসূচি দেয়ার কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচির আয়োজন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদ করা শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেন ভিসি। এজন্য ২৬ মার্চ থেকেই তার পদত্যাগ দাবীতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলন দমাতে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনার পর হল ত্যানের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সিটি মেয়র’র উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠকের পরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হয়। কিন্তু তার পরেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
সবশেষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ১৫ দিনের জন্য ছুটিতে যাবার আবেদন করেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে। কিন্তু ছুটির এই আবেদন লোকদেখানো দাবী করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে রেজিষ্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান ও জনসংযোগ বিভাগের চলতি দায়িত্বে উপ-পরিচালক ফয়সল আহমেদ রুমিকে অবাঞ্চিত ঘোষনা এবং ভিসি’র পদত্যাগ দাবীতে চারবার বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। ভিসি’র পদত্যাগ বা স্থায়ী ছুটিতে যাবার বিষয়টি লিখিতভাবে না পাওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।