পরীক্ষার হলে দেখে লেখার করণে শিক্ষক খাতা কেড়া নেওয়ায় দুই গালে থাপ্পর দিলেন ছাত্র। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাতে ছড়িয়ে পড়লে দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি শারমিন আক্তারকে। তিন কার্যদিবসের মধ্য কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবে।
রোববার বেলা ১১টার পরে চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষর্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত ছিলেন দিবা সিফটের বাংলা সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান। রোববার সকাল ১০টায় বাণিজ্য বিভাগের হিসাব বিজ্ঞান পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর ১ ঘন্টা ১১ মিনিটের সময় বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী সাইফুল আমিন শীর্ষ হলে ভেতর অন্যার দেখে লিখছিল। প্রথমে তাকে নির্ধারিত আসন থেকে সরিয়ে সামনের একটি বেঞ্চে বসায়। আবারও পিছন ঘুরে অন্যর দেখে লেখা ও পিছনের বেঞ্চে দুই হাত দিয়ে বসে ছিল।
বিষয়টি দায়িত্বরত শিক্ষক দেখে ছাত্রের কাছে এসে খাতা কেড়ে নিয়ে টেবিলের উপর রেখেন। এরপর দুই জনের মধ্য কথাকাটাকাটি হয়। শিক্ষক দুই বুকের উপর ঠেলা দিয়ে ছাত্রকে বেঞ্চে বসার জন্য বলে। কয়েক মিনিট তার নির্ধারিত আসনে বসে থাকেন। এরপর ছাত্র সাইফুল আমিন শীর্ষ বেঞ্চ থেকে উঠে এসে শিক্ষকের দুই গালে থাপ্পর মেরে বাইরে চলে যায়। এরপর বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে শিক্ষকের গালে থাপ্পর মারার বিষয়টি সবার নজরে আসে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিষয়টি অবহিত করতে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার সাথে দেখা করে বিষয়টি অবহিত করেন।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সদর সার্কেলর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিছুজ্জামান লালন, জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান ও ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান। তিন কার্যদিবসের ভেতরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
স্থানীয় ও প্রাক্তন ছাত্ররা জানায়, এটি একটি জঘন্যতম ঘটনা। ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা এ স্কুলে পড়াশুনা করেছি। শিক্ষকদের সাথে কখনও বেয়াদপি করেনি। শাস্তি ছাড়া কোন সমাধান নেই।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ক্লাসে যাওয়ার মত পরিবেশ চায় আমরা। ছাত্র এমন আচরণ করবে তা আমরা কখনও ভাবেনি। অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সদর থানায়। অভিযোগটি ক্রটিপূর্ণ থাকায় সংশোধন করে আনার জন্য বলা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান বলেন, পরীক্ষা চলাকলিন সময় একজন শিক্ষককে একজন ছাত্র লাঞ্চিত করেছে। বিষয়টি আমরা আমাদের অবিভাবককে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। জেলা প্রশাসক আমাদের আশ্বাস্ত করেছেন আইনি ব্যবস্থা নিতে ও পাশে থাকবেন বলে জানান। শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে নির্বাচনী পরীক্ষা দিচ্ছে।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষখ আদমাদের লিখিত দিয়েছে। চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩ কার্যদিবসের মধ্য প্রতিবেদন দেবেন কমিটি। প্রতিবেদন পেলে তার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একাডেমিক বিষয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থা নেবে। দায়ি ব্যাক্তিকে চিহিৃত, পরবর্তী করণীয় ও বিষয়গুলো যেভাবে উঠে আসবে সে অনুযায়ি পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।