#

কর্তৃপক্ষের কোনো আয়োজন না থাকলেও জাঁকালোভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৪ এপ্রিল) মঙ্গল শোভাযাত্রা, বাঙালি সংস্কৃতির গান-বাজনা ও নৃত্যু পরিবেশন, চিত্রাঙ্কন, হাড়িভাঙা প্রতিযোগিতার পাশাপাশি মুড়িমুড়কি বাতাসার আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে বাংলা বর্ষকে বরণ করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ব্যতিক্রম আয়োজন হিসেবে আগের ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা লুঙ্গির সঙ্গে পাঞ্জাবি আর ছাত্রীরা বৈশাখী শাড়ি পরে নববর্ষ উৎসবে অংশ নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিবছর পহেলা বৈশাখের উৎসবের আয়োজন করেন। এবার তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অথচ গত ৭ এপ্রিল (রোববার) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকে এ অব্দি বৈশাখের আয়োজন থেকে কখনো শিক্ষার্থীরা তাদের গুটিয়ে রাখেননি। তাই নিজেদের উদ্যোগে এবারে বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈশাখের আয়োজন করেছি সব শিক্ষার্থীরা মিলে।

শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ক্যাম্পাসে থাকা সব শিক্ষার্থীদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে দু’দিন আগেই আমরা বৈশাখ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেই। তাই ভিসির পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলন দু’দিন স্থগিত রাখা হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পহেলা বৈশাখের দিন সকাল ১০টায় অমঙ্গল দূর করতে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। যা একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে এসে শেষ হয়।

এরপর সকাল ১১টায় মুড়িমুড়কি বাতাসার আপ্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে নেচে-গেয়ে বৈশাখ উদযাপন করেন। দুপুর ১২টায় যেমন খুশি তেমন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও দুপুর ১টায় হাড়িভাঙা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে রয়েছে উন্মুক্ত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন বাংলানিউজকে জানান, শিক্ষার্থীদের এ বৈশাখী আয়োজন উপভোগ করতে সকালে শিক্ষকদের একাংশ ক্যাম্পাসে এসেছেন, সময় কাটিয়েছেন আমাদের সঙ্গে। বিকেলের অনুষ্ঠানে অনেকে আসবেন।

শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আন্দোলন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‌‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেয়। এর প্রতিবাদে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

২৬ মার্চ থেকে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রধান, ডিসি অফিস ঘেরাও, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ, নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে লিখে ভিসির পদত্যাগ দাবি, ভিসির কুশপুতুল দাহ ও মশালমিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

পহেলা বৈশাখের কারণে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার জন্য শনিবার (১৩ এপ্রিল) ও রোববার কোনো কর্মসূচি দেয়নি শিক্ষার্থীরা। তবে সোমবার থেকে নতুন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন শুরু হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন