রোববার ঢাকায় আসছে হাদিসুরের মরদেহ। ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত ‘এম ভি বাংলা’র সমৃদ্ধি জাহাজের নাবিক থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমানের মরদেহ বর্তমানে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের পথে রয়েছে।
শুক্রবার রাত ১২টার দিকে হাদিসুরের মরদেহ বুখারেস্টে পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন বিএমএমওএ সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. সাখাওয়াত হোসাইন।
তিনি রাত ৯টা ৪০ মিনিটে জাগো নিউজকে বলেন, তার্কিশ এয়ারের একটি ফ্লাইটে রোববার (১৩ মার্চ) রাত ৮টায় ঢাকায় আসবে হাদিসুরের মরদেহ। এরই মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মলদোভা হয়ে রোমানিয়ায় প্রবেশ করে হাদিসুরের মরদেহ। রোমানিয়া কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা তার মরদেহ গ্রহণ করেন।
ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসাইন জানান, শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১১টায় মলদোভার উদ্দেশ্য যাত্রা করে মরদেহবাহী ফ্রিজার ভ্যান। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মলদোভা পৌঁছে। রাত ১২টার দিকে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে পৌঁছাতে পারে।
এ মেরিন প্রকৌশলী বলেন, ইউক্রেনে ‘যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে অফিসিয়াল লোকজন না থাকায় হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেন থেকে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হয়। মরদেহটি বৃহস্পতিবার ভোরে রোমানিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা। কিন্তু রোমানিয়ান অথরিটি শেষ মুহূর্তে হাদিসুরের পরিবারের সম্মতিপত্র চাওয়াতে যাত্রা বিলম্বিত হয়। বাংলাদেশ থেকে ইমেইলে সম্মতিপত্র পাঠানো হয়। যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করে শুক্রবার বেলা ১১টায় মলদোভার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।
জানা গেছে, বিএসসির মালিকানাধীন জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ডেনিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে যায় জাহাজটি। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল।
এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে ওলভিয়া বন্দরে আটকাপড়ে জাহাজটি। পরবর্তীতে গত বুধবার ২ মার্চ রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যায়। তবে অন্য ২৮ জনকে বৃহস্পতিবার অক্ষত অবস্থায় জাহাজটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসসি।
এরপর হাদিসুরের মরদেহ ও বেঁচে যাওয়া ২৮ নাবিককে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সহযোগিতায় উদ্ধার পরবর্তী শনিবার ৫ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুরে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দর সংলগ্ন বাংকার (শেল্টার হাউস) থেকে বেরিয়ে মালদোভার পথে যাত্রা করেন ২৮ নাবিক।
রোববার ৬ মার্চ বেলা ১১টার দিকে তারা ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে মালদোভা হয়ে তারা রোববার দুপুরের পর রোমানিয়া পৌঁছান। বুধবার ২৮ নাবিক রোমানিয়ার বুখারেস্ট বিমানবন্দর থেকে তার্কিশ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ইস্তাম্বুল হয়ে ঢাকায় ফেরেন। তন্মধ্যে ১২ নাবিক বুধবার রাতেই নভো এয়ারের একটি লোকাল ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসেন।