আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভ্যাট বসানো হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে প্রচারণা চলছে তা ঠিক নয়।
বাজেটে বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর কোনো মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বসানো হয়নি বলে বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এনবিআরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভ্যাট আরোপ হয় পণ্য ও সেবা সরবরাহের ওপর। বাংলাদেশের প্রবাসী দেশের বাইরে কঠোর শ্রমের বিনিময়ে যে সেবা দিয়ে থাকেন, এর বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। এই কার্যক্রম ১৯৯১ সালের মূল্য সংযোজন কর আইনের ৩ নম্বর ধারার ২ (ক) নম্বর উপধারা অনুযায়ী, সেবা রফতানি হিসেবে বিবেচিত। তাই এই রফতানি কার্যক্রম ভ্যাটের আওতাবহির্ভূত। অর্থাৎ রেমিট্যান্স যা-ই আসুক না কেন, এই খাতের ওপর ভ্যাট বসবে না। তাই প্রবাসীরা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যেকোনো পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স ও প্রেরণ করতে পারেন।
৭ জুন বাজেট ঘোষণার পর থেকেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকদিন ধরে প্রচারিত হচ্ছে যে রেমিট্যান্সের ওপর এবারের বাজেটে ভ্যাট বসানো হয়েছে। বলা হচ্ছে, ১২ হাজার টাকার বেশি পাঠালেই ভ্যাট দিতে হবে। বিভিন্ন মহল থেকে এর সমালোচনাও করছে।
এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার দুপুরে এনবিআর এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। সংস্থাটি বলেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের প্রচার সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব। দেশের বৈধ রেমিট্যান্স প্রবাহ বন্ধ করে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর অপপ্রয়াস হিসেবে এই প্রচারণা চালানো হতে পারে বলে এনবিআর মনে করে।
উল্লেখ, দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স। গত কয়েকবছর ধরে গড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স আসছে। এর ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) ১ হাজার ৩৫৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে।