হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে প্রবাসী আয়। চলতি বছরের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩০ কোটি ৪ লাখ মার্কিন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২২ কোটি ২৯ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং চ্যানেল বহির্ভূত অবৈধভাবে মোবাইল ব্যাংকিং হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে প্রবাসী আয়ে। এ কারণে রেমিট্যান্স বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অবৈধ লেনদেনের দায়ে বন্ধ করা হয় বিকাশের দুই হাজার ৮৮৭টি এজেন্টের নম্বর। এসব পদক্ষেপের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক প্রবাহ পড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানেও রেমিট্যান্স বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১১৪ কোটি ৯০ ডলার রেমিট্যান্স পঠিয়েছে প্রবাসীরা। সেই হিসাবে ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৫ কোটি ১৪ লাখ ডলার। আর চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে (জুলাই -মার্চ) ৯ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৭৬ কোটি ১৩ লাখ ডলার।
এদিকে মার্চে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৩১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ১৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৯৫ কোটি ৯৫ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এক কোটি ৩৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
বরাবরের মতই বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ২৮ কোটি ২৫ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার এবং জনতার মাধ্যমে ৭ কোটি ৭১ ডলার রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীরা এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার সমপরিমাণ মূল্যের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল এক হাজার ৪৯২ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমেছে ২১৬ কোটি ১৭ কোটি ডলার বা ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।